চলছে ‘রুশ’ বানাবার কর্মসূচি
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই শিশু অপহরণের ঘটনা ঘটতে থাকে। কিছু শিশুকে অপহরণ করা হয় এতিমখানা থেকে, কাউকে যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত মা-বাবার থেকে, কাউকে আবার জোর করে পরিবারের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
স্ট্রিম ডেস্ক
ইউক্রেনীয় শিশুদের তুলে নিচ্ছে রাশিয়া। পাঠানো হচ্ছে সামরিক ক্যাম্পে বা দত্তক পরিবারে। অনেক শিশুই আর ঘরে ফিরবে না। চলছে তাদের ‘রুশ’ বানাবার কর্মসূচি। আলোচনার টেবিলে তারা এখন চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার।
এক মার্কিন বিশেষজ্ঞ দলের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৩৫ হাজার ইউক্রেনীয় শিশু নিখোঁজ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা রাশিয়া বা রুশ-অধিকৃত এলাকায় আটকে আছে। নিখোঁজ শিশুদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সন্তানদের উদ্ধারে তাঁদের চরম ঝুঁকি নিতে হচ্ছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই শিশু অপহরণের ঘটনা ঘটতে থাকে। কিছু শিশুকে অপহরণ করা হয় এতিমখানা থেকে, কাউকে যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত বাবা-মায়ের থেকে, কাউকে আবার জোর করে পরিবারের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
রাশিয়া এসব শিশুদের ফেরত দেওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। চলতি মাসে তুরস্কে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় এক রুশ কর্মকর্তা বলেন, ‘নিখোঁজ শিশুদের বিষয়ে ইউক্রেন নাটক করছে।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে এক ইউক্রেনীয় মা জানান, তাঁর দুই কিশোর ছেলেকে রাশিয়ার এক শিবিরে প্রায় ছয় মাস আটকে রাখা হয়েছিল। পরে নানা ঝুঁকি নিয়ে তিনি নিজেই তাদের উদ্ধার করেন।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের খেরসন শহর দখল করে নেয়। সেই শহরের বাসিন্দা নাটালিয়াকে এক প্রতিবেশী পরামর্শ দেন, রাশিয়ার আনাপা শহরের একটি শিশুশিবিরে তাঁর ছেলেদের রেখে আসতে।
নাটালিয়া বলেন, ‘২১ দিনের এই সফর ছিল ফ্রি। শিবির শেষে ছেলেদের খেরসন ফেরার কথা ছিল। ছেলেরাও যেতে চেয়েছিল। কিন্তু ওদের পাঠিয়ে আমি বড় ভুল করেছি।’
২০২২ সালের শেষ দিকে ইউক্রেনীয় সেনারা খেরসন পুনর্দখল করে। কিন্তু নাটালিয়ার ছেলেরা তখনো ওপারে। রাশিয়া তাদের ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়নি।
‘শিবির কর্তৃপক্ষ জানায়, আমি নিজে উপস্থিত না থাকলে ছেলেদের ছাড়া হবে না। বুঝতে পারছিলাম না কী করব’, নাটালিয়া বলেন।
একপর্যায়ে ইউক্রেনের একটি সংগঠনের সহায়তায় নাটালিয়া তাঁর ছেলেদের জন্য পরিচয়পত্র তৈরি করেন।
পরে তিনি একাই সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার আনাপা শহরে যান। শহরটি কৃষ্ণসাগরের উত্তর উপকূলে অবস্থিত। পথে পেরোতে হয় বহু চেকপোস্ট। প্রতিটিতে রুশ সেনাদের কাছে ব্যাখ্যা দিতে হয়, কেন তিনি রাশিয়ায় গেছেন।
ক্রমাগত গোলাবর্ষণের মধ্যে ছয় দিন সফর করে তিনি সন্তানদের দেখা পান। তখন ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি। ‘আমার অনুভূতি আপনি কখনো বুঝবেন না। ছেলেরাই আমার সবকিছু’, নাটালিয়া বলেন।
ইউক্রেনীয় সংগঠন ব্রিং কিডস ব্যাক জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে ফেরা বা পালিয়ে আসা শিশুর সংখ্যা মাত্র ১ হাজার ৩ শ ৬৬। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন, এখনো প্রায় ৩৫ হাজার ইউক্রেনীয় শিশু রাশিয়া ও রুশ-অধিকৃত এলাকায় আটক আছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, রুশ বাহিনী শিশুদের অপহরণ করে সামরিক ক্যাম্পে পাঠিয়েছে। কোনো কোনো শিশুকে রুশ পরিবারগুলো দত্তক নিয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
রাশিয়ার বিভিন্ন সরকারি ডেটাবেস, দাপ্তরিক নথি, পারিবারিক যোগাযোগ এবং স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটি বহু শিশুর পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক গবেষণা ল্যাবের নির্বাহী পরিচালক ন্যাথানিয়েল রেমন্ড বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধকালীন শিশু অপহরণের এটাই সম্ভবত সবচেয়ে বড় ঘটনা। পোলিশ শিশুদের জোর করে জার্মান বানানোর নাৎজি ঘটনার সঙ্গে কেবল এর তুলনা চলে।’
সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া শিশুদের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে, ক্যাম্পগুলোয় তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। ইউক্রেনীয় ভাষায় কথা বললে পেতে হতো শাস্তি। ৯ বছর বয়সী এক শিশু জানায়, ‘আমাদের রুশ জাতীয় সংগীত গাইতে হতো। আর আঁকতে হতো রাশিয়ার পতাকা।’
ইউক্রেনীয় শিশু অধিকার নেটওয়ার্কের চেয়ারপারসন দারিয়া কাসিয়ানোভা জানান, আদেশ অমান্য করলে মা-বাবা ফল ভোগ করবে–এমন ভয়ও দেখানো হতো শিশুদের।
অধিকারকর্মী ও গবেষকদের মতে, ইউক্রেনীয় শিশুদের অপহরণ ও দেশান্তর নতুন কোনো ঘটনা নয়। দারিয়া বলেন, ২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ক্রিমিয়া দখল করে, তখনো তিনি এই ধরনের অপহরণের সাক্ষী হয়েছেন।
২০১৪ সালে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এলাকা থেকে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ সরাতে কাজ করেছিলেন দারিয়া। এই মানুষগুলোর মধ্যে ১২ হাজার ছিল শিশু। সে সময়ের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘তখন আমার মেয়ের বয়স ছিল ১১। তার কিছু বন্ধু ছিল, যাদের সরানো সম্ভব হয়নি। পরে তাদের রাশিয়ার সামরিক ক্যাম্পে পাঠানো হয়।’
অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, অনেক ইউক্রেনীয় শিশু রাশিয়ার দত্তকব্যবস্থা বা ফস্টার কেয়ারের মাধ্যমে হারিয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি রাশিয়ার আইন পরিবর্তন করা হয়েছে, যাতে রুশ নাগরিকেরা সহজে ইউক্রেনীয় শিশুদের দত্তক নিতে পারেন।
দারিয়া বলেন, ‘কখনো কখনো দেখা যায়, বাবা-মার মধ্যে একজন ইউক্রেনে রয়েছেন। আর অন্যজন তখন সন্তানের সঙ্গে রুশ অধিকৃত অঞ্চলে। ওই অভিভাবক মারা গেলে বা গ্রেপ্তার হলে শিশুটি একা হয়ে পড়ে। তখন তাকে হয়তো এতিমখানায় পাঠানো হয়। আর যদি তা হয়, তাহলে শিশুটিকে ফেরত আনা প্রায় অসম্ভব। তারা হারিয়ে যায়।’
ন্যাথানিয়েল বলেন, ‘যখন একটি জাতিগোষ্ঠীর শিশুকে জোর করে তুলে নিয়ে অন্য জাতিগোষ্ঠীর অংশ করে তোলা হয়, তখন সেটি যুদ্ধাপরাধ।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও (আইসিসি) বিষয়টিকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তাঁর শিশু অধিকারবিষয়ক কমিশনার মারিয়া লভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ইউক্রেনীয় শিশুদের অবৈধভাবে দেশান্তর করার অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করা হয়।
রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান দাবি হলো অপহৃত শিশুদের ফেরত দিতে হবে। ইউক্রেনের দাতব্য সংস্থা হেল্পিং টু লিভ-এর একজন ইভাকুয়েশন-বিশেষজ্ঞ কসেনিয়া বলেন, ‘আমরা ভূমি নিয়ে আলোচনা করছি। অথচ আমাদের মানুষ, সন্তানেরাই তো আমাদের সত্যিকারের ভূমি। আমরা কীভাবে তাদের ছেড়ে দিই?’
ন্যাথানিয়েল বলছেন, রাশিয়া এখন এই শিশুদের আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তাঁর মতে, ‘রাশিয়া যখন আক্রমণ শুরু করে, তখন তারা ভেবেছিল, দ্রুত জিতে যাবে। তাই তারা শিশু অপহরণ করা শুরু করে। এই অপহরণের উদ্দেশ্য শিশুদের আটকে রাখা ছিল না। বরং তারা চেয়েছিল, শিশুদের চরিত্র পরিবর্তনের মাধ্যমে ইউক্রেনকে রাশিয়ায় পরিণত করবে। কিন্তু ক্রমেই রুশদের জন্য পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে, তারা এই শিশুদের দরকষাকষির ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার শুরু করে।’
ইউক্রেনীয় শিশুদের তুলে নিচ্ছে রাশিয়া। পাঠানো হচ্ছে সামরিক ক্যাম্পে বা দত্তক পরিবারে। অনেক শিশুই আর ঘরে ফিরবে না। চলছে তাদের ‘রুশ’ বানাবার কর্মসূচি। আলোচনার টেবিলে তারা এখন চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার।
এক মার্কিন বিশেষজ্ঞ দলের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৩৫ হাজার ইউক্রেনীয় শিশু নিখোঁজ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা রাশিয়া বা রুশ-অধিকৃত এলাকায় আটকে আছে। নিখোঁজ শিশুদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সন্তানদের উদ্ধারে তাঁদের চরম ঝুঁকি নিতে হচ্ছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই শিশু অপহরণের ঘটনা ঘটতে থাকে। কিছু শিশুকে অপহরণ করা হয় এতিমখানা থেকে, কাউকে যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত বাবা-মায়ের থেকে, কাউকে আবার জোর করে পরিবারের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
রাশিয়া এসব শিশুদের ফেরত দেওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। চলতি মাসে তুরস্কে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় এক রুশ কর্মকর্তা বলেন, ‘নিখোঁজ শিশুদের বিষয়ে ইউক্রেন নাটক করছে।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে এক ইউক্রেনীয় মা জানান, তাঁর দুই কিশোর ছেলেকে রাশিয়ার এক শিবিরে প্রায় ছয় মাস আটকে রাখা হয়েছিল। পরে নানা ঝুঁকি নিয়ে তিনি নিজেই তাদের উদ্ধার করেন।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের খেরসন শহর দখল করে নেয়। সেই শহরের বাসিন্দা নাটালিয়াকে এক প্রতিবেশী পরামর্শ দেন, রাশিয়ার আনাপা শহরের একটি শিশুশিবিরে তাঁর ছেলেদের রেখে আসতে।
নাটালিয়া বলেন, ‘২১ দিনের এই সফর ছিল ফ্রি। শিবির শেষে ছেলেদের খেরসন ফেরার কথা ছিল। ছেলেরাও যেতে চেয়েছিল। কিন্তু ওদের পাঠিয়ে আমি বড় ভুল করেছি।’
২০২২ সালের শেষ দিকে ইউক্রেনীয় সেনারা খেরসন পুনর্দখল করে। কিন্তু নাটালিয়ার ছেলেরা তখনো ওপারে। রাশিয়া তাদের ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়নি।
‘শিবির কর্তৃপক্ষ জানায়, আমি নিজে উপস্থিত না থাকলে ছেলেদের ছাড়া হবে না। বুঝতে পারছিলাম না কী করব’, নাটালিয়া বলেন।
একপর্যায়ে ইউক্রেনের একটি সংগঠনের সহায়তায় নাটালিয়া তাঁর ছেলেদের জন্য পরিচয়পত্র তৈরি করেন।
পরে তিনি একাই সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার আনাপা শহরে যান। শহরটি কৃষ্ণসাগরের উত্তর উপকূলে অবস্থিত। পথে পেরোতে হয় বহু চেকপোস্ট। প্রতিটিতে রুশ সেনাদের কাছে ব্যাখ্যা দিতে হয়, কেন তিনি রাশিয়ায় গেছেন।
ক্রমাগত গোলাবর্ষণের মধ্যে ছয় দিন সফর করে তিনি সন্তানদের দেখা পান। তখন ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি। ‘আমার অনুভূতি আপনি কখনো বুঝবেন না। ছেলেরাই আমার সবকিছু’, নাটালিয়া বলেন।
ইউক্রেনীয় সংগঠন ব্রিং কিডস ব্যাক জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে ফেরা বা পালিয়ে আসা শিশুর সংখ্যা মাত্র ১ হাজার ৩ শ ৬৬। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন, এখনো প্রায় ৩৫ হাজার ইউক্রেনীয় শিশু রাশিয়া ও রুশ-অধিকৃত এলাকায় আটক আছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, রুশ বাহিনী শিশুদের অপহরণ করে সামরিক ক্যাম্পে পাঠিয়েছে। কোনো কোনো শিশুকে রুশ পরিবারগুলো দত্তক নিয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
রাশিয়ার বিভিন্ন সরকারি ডেটাবেস, দাপ্তরিক নথি, পারিবারিক যোগাযোগ এবং স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটি বহু শিশুর পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক গবেষণা ল্যাবের নির্বাহী পরিচালক ন্যাথানিয়েল রেমন্ড বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধকালীন শিশু অপহরণের এটাই সম্ভবত সবচেয়ে বড় ঘটনা। পোলিশ শিশুদের জোর করে জার্মান বানানোর নাৎজি ঘটনার সঙ্গে কেবল এর তুলনা চলে।’
সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া শিশুদের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে, ক্যাম্পগুলোয় তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। ইউক্রেনীয় ভাষায় কথা বললে পেতে হতো শাস্তি। ৯ বছর বয়সী এক শিশু জানায়, ‘আমাদের রুশ জাতীয় সংগীত গাইতে হতো। আর আঁকতে হতো রাশিয়ার পতাকা।’
ইউক্রেনীয় শিশু অধিকার নেটওয়ার্কের চেয়ারপারসন দারিয়া কাসিয়ানোভা জানান, আদেশ অমান্য করলে মা-বাবা ফল ভোগ করবে–এমন ভয়ও দেখানো হতো শিশুদের।
অধিকারকর্মী ও গবেষকদের মতে, ইউক্রেনীয় শিশুদের অপহরণ ও দেশান্তর নতুন কোনো ঘটনা নয়। দারিয়া বলেন, ২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ক্রিমিয়া দখল করে, তখনো তিনি এই ধরনের অপহরণের সাক্ষী হয়েছেন।
২০১৪ সালে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এলাকা থেকে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ সরাতে কাজ করেছিলেন দারিয়া। এই মানুষগুলোর মধ্যে ১২ হাজার ছিল শিশু। সে সময়ের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘তখন আমার মেয়ের বয়স ছিল ১১। তার কিছু বন্ধু ছিল, যাদের সরানো সম্ভব হয়নি। পরে তাদের রাশিয়ার সামরিক ক্যাম্পে পাঠানো হয়।’
অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, অনেক ইউক্রেনীয় শিশু রাশিয়ার দত্তকব্যবস্থা বা ফস্টার কেয়ারের মাধ্যমে হারিয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি রাশিয়ার আইন পরিবর্তন করা হয়েছে, যাতে রুশ নাগরিকেরা সহজে ইউক্রেনীয় শিশুদের দত্তক নিতে পারেন।
দারিয়া বলেন, ‘কখনো কখনো দেখা যায়, বাবা-মার মধ্যে একজন ইউক্রেনে রয়েছেন। আর অন্যজন তখন সন্তানের সঙ্গে রুশ অধিকৃত অঞ্চলে। ওই অভিভাবক মারা গেলে বা গ্রেপ্তার হলে শিশুটি একা হয়ে পড়ে। তখন তাকে হয়তো এতিমখানায় পাঠানো হয়। আর যদি তা হয়, তাহলে শিশুটিকে ফেরত আনা প্রায় অসম্ভব। তারা হারিয়ে যায়।’
ন্যাথানিয়েল বলেন, ‘যখন একটি জাতিগোষ্ঠীর শিশুকে জোর করে তুলে নিয়ে অন্য জাতিগোষ্ঠীর অংশ করে তোলা হয়, তখন সেটি যুদ্ধাপরাধ।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও (আইসিসি) বিষয়টিকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তাঁর শিশু অধিকারবিষয়ক কমিশনার মারিয়া লভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ইউক্রেনীয় শিশুদের অবৈধভাবে দেশান্তর করার অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করা হয়।
রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান দাবি হলো অপহৃত শিশুদের ফেরত দিতে হবে। ইউক্রেনের দাতব্য সংস্থা হেল্পিং টু লিভ-এর একজন ইভাকুয়েশন-বিশেষজ্ঞ কসেনিয়া বলেন, ‘আমরা ভূমি নিয়ে আলোচনা করছি। অথচ আমাদের মানুষ, সন্তানেরাই তো আমাদের সত্যিকারের ভূমি। আমরা কীভাবে তাদের ছেড়ে দিই?’
ন্যাথানিয়েল বলছেন, রাশিয়া এখন এই শিশুদের আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তাঁর মতে, ‘রাশিয়া যখন আক্রমণ শুরু করে, তখন তারা ভেবেছিল, দ্রুত জিতে যাবে। তাই তারা শিশু অপহরণ করা শুরু করে। এই অপহরণের উদ্দেশ্য শিশুদের আটকে রাখা ছিল না। বরং তারা চেয়েছিল, শিশুদের চরিত্র পরিবর্তনের মাধ্যমে ইউক্রেনকে রাশিয়ায় পরিণত করবে। কিন্তু ক্রমেই রুশদের জন্য পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে, তারা এই শিশুদের দরকষাকষির ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার শুরু করে।’
প্রতিবছর চাসোটি থেকে কিসওয়ারের মাতা চণ্ডী হিমালয় তীর্থস্থানে বার্ষিক যাত্রা শুরু হয়। আকস্মিক বন্যার কারণে বার্ষিক এ যাত্রা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেব্রিটেনের সাবেক সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে চলা দুর্নীতির মামলা একটি ‘প্রহসন’ এবং এটি ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধ’ থেকে করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রশাসন ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক অভিযোগ’ ছড়াচ্ছে এবং মনগড়া অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
১১ ঘণ্টা আগেরাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই বৈঠকে পুতিন যদি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হন তবে তাকে ‘কঠোর পরিণতি’ হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
১২ ঘণ্টা আগেপ্রতিবেদনের নির্বাহী সার সংক্ষেপে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহের ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন এবং আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালান। ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।
১ দিন আগে