leadT1ad

মিয়ানমারে চার বছর পর জরুরি অবস্থা তুলে নিল জান্তা সরকার, ডিসেম্বরে নির্বাচনের ঘোষণা

স্ট্রিম ডেস্ক
বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের পরেও মিন অং হ্লাইং প্রেসিডেন্ট অথবা সেনাপ্রধানের পদ ধরে রাখতে পারেন এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে পারেন। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মিয়ানমারে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেছে দেশটির জান্তা সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মিয়ানমার রেডিও ও টেলিভিশনের (এমআরটিভি) বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মিন অং হ্লাইং অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যত দেশটির দায়িত্বে থাকবেন এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করবেন। তবে নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।

এদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের বিশ্বাস অর্জনের লক্ষ্যে মিয়ানমারের জান্তা সরকার দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেছে।

জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন সাংবাদিকদের পাঠানো এক ভয়েস মেসেজে বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে নির্বাচনের জন্য আজ জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হলো। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর এটিই মিয়ানমারের প্রথম জাতীয় ভোট। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল সেনাবাহিনী। যার ফলে দেশজুড়ে বহুমুখী গৃহযুদ্ধ শুরু হয় এবং হাজারো মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

নতুন নির্বাচন আইন জারি

এর আগে, অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রাক্তন সংসদ সদস্যসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। গত জুন মাসে জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যায়িত করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের পরেও মিন অং হ্লাইং প্রেসিডেন্ট অথবা সেনাপ্রধানের পদ ধরে রাখতে পারেন এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে পারেন। যার ফলে কার্যত তাঁর শাসনই অব্যাহত থাকবে।

নির্বাচনের সঠিক তারিখ ঘোষণা করা না হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন চলছে এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল বুধবার (৩০ জুলাই) সেনাশাসিত সরকার জানায়, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার কোনো অংশ নষ্ট করার চেষ্টা চালালে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

এই আইনে বলা হয়েছে, কেউ যদি নির্বাচনী প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য বিক্ষোভ, চিঠি বিলি, ভাষণ, আন্দোলন বা প্রচারণা করে, তাকে ৩ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হবে।

এ ছাড়াও, নির্বাচন কমিশনের কর্মী, প্রার্থী বা ভোটারদের হুমকি দেওয়া, বাধা সৃষ্টি করা, অপমান করা বা গুরুতরভাবে আঘাত করার অপরাধে তিন বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

২০২৪ সালে নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে হওয়া এক জনগণনায় দেখা গেছে, নিরাপত্তাজনিত সীমাবদ্ধতার কারণে ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। যা ইঙ্গিত করে, গৃহযুদ্ধ চলাকালে নির্বাচনের জনগণের অংশগ্রহণ কতটা সীমিত হতে পারে।

বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে বিদ্রোহীরা নির্বাচনের সময় বড় ধরনের আক্রমণ চালাতে পারে।

তবে চলতি মাসে জান্তা সরকার অস্ত্র ফেলে দিয়ে ‘আইনের আওতায় ফিরে আসতে’ ইচ্ছুকদের জন্য নগদ পুরস্কার ঘোষণা করেছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত