যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকখাতকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। যদি আমরা এখনই প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক উদ্যোগ, নীতি সংস্কার ও কাঠামোগত উন্নয়নের পথে না হাঁটি, তবে এ খাত তার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে।
মো. নেয়ামুল ইসলাম
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত দীর্ঘদিন ধরে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। শ্রমঘন এই খাতটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান উৎস হিসেবে বিগত তিন দশকে আন্তর্জাতিক বাজারে এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বিশ্ববাণিজ্যের রূপরেখায় যে পরিবর্তন এসেছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি বা ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ ব্যবস্থা, তাতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাত এক বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি যেসব দেশ থেকে নানান পণ্য আমদানি করে, তাদের ওপর পুনঃনির্ধারিত শুল্কহার আরোপ করেছে। এ তালিকায় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এর পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ‘রুলস অব অরজিন’ (আরওও) বা উৎপত্তিস্থলের শর্ত।
পোশাকপণ্যের ক্ষেত্রে যদি উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল চীনসহ তৃতীয় কোনো দেশ থেকে আসে এবং তা নির্ধারিত উৎপত্তিশর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে অতিরিক্ত ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে কার্যত ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের আশঙ্কা রয়েছে, যা নিঃসন্দেহে এক অশনি সংকেত।
এ প্রেক্ষাপটে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোর অবস্থান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নতুন তালিকায় দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী ভিয়েতনামেও ২০ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য হচ্ছে। তবে এটিকে সমতা মনে করলেও বাস্তবে চিত্রটি ভিন্ন। ভিয়েতনাম উৎপাদনে প্রযুক্তিনির্ভর, কাঁচামালের অভ্যন্তরীণ উৎস মজবুত, পণ্যের বৈচিত্র্য বেশি এবং সরবরাহ ব্যবস্থাও অনেক দ্রুত। ফলে একই হারে শুল্ক দিয়েও তারা বাজারে অধিক সুবিধাপ্রাপ্ত। অন্যদিকে, ভারত ২৫% শুল্কের মুখে, তবে তাদের রয়েছে শক্তিশালী ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ। কম্বোডিয়া ও পাকিস্তান ১৯% হারে শুল্ক দেয়, যা বাংলাদেশ থেকে কিছুটা অনুকূল।
অপরদিকে যুক্তরাজ্য মাত্র ১০ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন জিএসপি প্লাস সুবিধায় বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর শূন্য শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে।
বাংলাদেশের পোশাকখাত যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো এই উচ্চ শুল্কহার। এ ছাড়া আরও বা ‘রুলস অব অরজি‘ সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতাও আমাদের জন্য বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠেছে। কারণ, আমাদের তৈরি পোশাক শিল্প এখনও অনেকাংশে চীনা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল। ফলে উৎপত্তিস্থলসংক্রান্ত শর্ত পূরণ করা অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। এটি আবার যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশের পথকে প্রায় বন্ধ করে দেয়।
তা ছাড়া বাংলাদেশের আরেকটি বড় দুর্বলতা হলো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অভাব। বর্তমানে বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা কিংবা বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই। তদুপরি বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের পরিসর এখনও সীমিত। মূলত টি-শার্ট, সোয়েটার ও ডেনিম জাতীয় পণ্যেই রপ্তানিতে সীমাবদ্ধ। বিপরীতে হাই-ভ্যালু বা প্রযুক্তিনির্ভর গার্মেন্টসের অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম। ফলে বৈচিত্র্যহীন পণ্যে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা হারানোর ঝুঁকি বাড়ছে আমাদের।
তবে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের বড় দুর্বলতা হলো, সরবরাহ ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রতা ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা। বন্দরের সক্ষমতা, কাস্টমস প্রক্রিয়ার ধীরগতি। তা ছাড়া ডেলিভারির লিড টাইম বেশি হওয়ায় অনেক সময় আন্তর্জাতিক ক্রেতারা বাংলাদেশকে বিশ্বাসযোগ্য সরবরাহকারী হিসেবে বিবেচনায় নিতে দ্বিধা করে।
এখন প্রশ্ন হলো, এ পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী?
প্রথম ও জরুরি প্রয়োজন হলো, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করা। আর আগের স্থগিত হওয়া জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও জোরদার করা আবশ্যক। পাশাপাশি দরকার স্থানীয় কাঁচামালের উৎপাদন বাড়ানো। নিজস্ব ফেব্রিক, স্পিনিং ও ডাইং সেক্টরেও বাড়াতে হবে বিনিয়োগ।
এর মাধ্যমে আমরা হয়তো রুলস অব অরজিন বা উৎপত্তিস্থলের শর্ত সহজেই পূরণ করতে পারব। পোশাকশিল্পে প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়ানো এবং স্পোর্টসওয়্যার, ওয়ার্কওয়্যার, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল ও মেডিকেল গার্মেন্টসের মতো উচ্চমূল্য সংযোজন পণ্য রপ্তানিতেও গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে রপ্তানি অবকাঠামো ও কাস্টমস প্রক্রিয়া করতে হবে দ্রুততর আর ডিজিটালাইজড, যাতে লিড টাইম কমিয়ে আনা যায়।
পরিবেশগত মান, শ্রম অধিকার ও সুশাসনের মতো আন্তর্জাতিক মান পূরণে বাংলাদেশের আরও অগ্রগতি প্রয়োজন। বিশেষত ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিপিএস প্লাস সুবিধা বজায় রাখতে হলে এসব শর্ত পূরণ অপরিহার্য। তাই ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের উচিত হবে এফটিএ বা সিইপিএ জাতীয় চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রসহ বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা।
সবশেষে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকখাতকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। যদি আমরা এখনই প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক উদ্যোগ, নীতি সংস্কার ও কাঠামোগত উন্নয়নের পথে না হাঁটি, তবে এ খাত তার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। আর তা হলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রবাহে বড় ধাক্কা আসবে। তাই সাহসী সিদ্ধান্ত, দূরদর্শী পরিকল্পনা ও বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণের এখনই সময়।
ড. মো. নেয়ামুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ট্যারিফ বিশেষজ্ঞ
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত দীর্ঘদিন ধরে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। শ্রমঘন এই খাতটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান উৎস হিসেবে বিগত তিন দশকে আন্তর্জাতিক বাজারে এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বিশ্ববাণিজ্যের রূপরেখায় যে পরিবর্তন এসেছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি বা ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ ব্যবস্থা, তাতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি খাত এক বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি যেসব দেশ থেকে নানান পণ্য আমদানি করে, তাদের ওপর পুনঃনির্ধারিত শুল্কহার আরোপ করেছে। এ তালিকায় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এর পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ‘রুলস অব অরজিন’ (আরওও) বা উৎপত্তিস্থলের শর্ত।
পোশাকপণ্যের ক্ষেত্রে যদি উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল চীনসহ তৃতীয় কোনো দেশ থেকে আসে এবং তা নির্ধারিত উৎপত্তিশর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে অতিরিক্ত ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে কার্যত ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের আশঙ্কা রয়েছে, যা নিঃসন্দেহে এক অশনি সংকেত।
এ প্রেক্ষাপটে তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোর অবস্থান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নতুন তালিকায় দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রতিযোগী ভিয়েতনামেও ২০ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য হচ্ছে। তবে এটিকে সমতা মনে করলেও বাস্তবে চিত্রটি ভিন্ন। ভিয়েতনাম উৎপাদনে প্রযুক্তিনির্ভর, কাঁচামালের অভ্যন্তরীণ উৎস মজবুত, পণ্যের বৈচিত্র্য বেশি এবং সরবরাহ ব্যবস্থাও অনেক দ্রুত। ফলে একই হারে শুল্ক দিয়েও তারা বাজারে অধিক সুবিধাপ্রাপ্ত। অন্যদিকে, ভারত ২৫% শুল্কের মুখে, তবে তাদের রয়েছে শক্তিশালী ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ। কম্বোডিয়া ও পাকিস্তান ১৯% হারে শুল্ক দেয়, যা বাংলাদেশ থেকে কিছুটা অনুকূল।
অপরদিকে যুক্তরাজ্য মাত্র ১০ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন জিএসপি প্লাস সুবিধায় বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর শূন্য শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে।
বাংলাদেশের পোশাকখাত যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো এই উচ্চ শুল্কহার। এ ছাড়া আরও বা ‘রুলস অব অরজি‘ সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতাও আমাদের জন্য বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠেছে। কারণ, আমাদের তৈরি পোশাক শিল্প এখনও অনেকাংশে চীনা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল। ফলে উৎপত্তিস্থলসংক্রান্ত শর্ত পূরণ করা অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। এটি আবার যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশের পথকে প্রায় বন্ধ করে দেয়।
তা ছাড়া বাংলাদেশের আরেকটি বড় দুর্বলতা হলো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অভাব। বর্তমানে বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা কিংবা বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই। তদুপরি বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের পরিসর এখনও সীমিত। মূলত টি-শার্ট, সোয়েটার ও ডেনিম জাতীয় পণ্যেই রপ্তানিতে সীমাবদ্ধ। বিপরীতে হাই-ভ্যালু বা প্রযুক্তিনির্ভর গার্মেন্টসের অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম। ফলে বৈচিত্র্যহীন পণ্যে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা হারানোর ঝুঁকি বাড়ছে আমাদের।
তবে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের বড় দুর্বলতা হলো, সরবরাহ ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রতা ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা। বন্দরের সক্ষমতা, কাস্টমস প্রক্রিয়ার ধীরগতি। তা ছাড়া ডেলিভারির লিড টাইম বেশি হওয়ায় অনেক সময় আন্তর্জাতিক ক্রেতারা বাংলাদেশকে বিশ্বাসযোগ্য সরবরাহকারী হিসেবে বিবেচনায় নিতে দ্বিধা করে।
এখন প্রশ্ন হলো, এ পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী?
প্রথম ও জরুরি প্রয়োজন হলো, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করা। আর আগের স্থগিত হওয়া জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও জোরদার করা আবশ্যক। পাশাপাশি দরকার স্থানীয় কাঁচামালের উৎপাদন বাড়ানো। নিজস্ব ফেব্রিক, স্পিনিং ও ডাইং সেক্টরেও বাড়াতে হবে বিনিয়োগ।
এর মাধ্যমে আমরা হয়তো রুলস অব অরজিন বা উৎপত্তিস্থলের শর্ত সহজেই পূরণ করতে পারব। পোশাকশিল্পে প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়ানো এবং স্পোর্টসওয়্যার, ওয়ার্কওয়্যার, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল ও মেডিকেল গার্মেন্টসের মতো উচ্চমূল্য সংযোজন পণ্য রপ্তানিতেও গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে রপ্তানি অবকাঠামো ও কাস্টমস প্রক্রিয়া করতে হবে দ্রুততর আর ডিজিটালাইজড, যাতে লিড টাইম কমিয়ে আনা যায়।
পরিবেশগত মান, শ্রম অধিকার ও সুশাসনের মতো আন্তর্জাতিক মান পূরণে বাংলাদেশের আরও অগ্রগতি প্রয়োজন। বিশেষত ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিপিএস প্লাস সুবিধা বজায় রাখতে হলে এসব শর্ত পূরণ অপরিহার্য। তাই ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের উচিত হবে এফটিএ বা সিইপিএ জাতীয় চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রসহ বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা।
সবশেষে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকখাতকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। যদি আমরা এখনই প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক উদ্যোগ, নীতি সংস্কার ও কাঠামোগত উন্নয়নের পথে না হাঁটি, তবে এ খাত তার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। আর তা হলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রবাহে বড় ধাক্কা আসবে। তাই সাহসী সিদ্ধান্ত, দূরদর্শী পরিকল্পনা ও বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণের এখনই সময়।
ড. মো. নেয়ামুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ট্যারিফ বিশেষজ্ঞ
১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট। উপমহাদেশের অনেক মানুষের চোখে ঘুম ছিল না সেই রাতে। এমন রাত তাঁদের জীবনে আগে কখনো আসেনি। তাঁরা জানত না রাতের আঁধারে কেমন সকাল তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে। সাতচল্লিশের সেই দেশভাগ বা পার্টিশনের প্রভাব এখনো বহন করে চলেছি আমরা। একে কোনো একরৈখিক বয়ানে বেঁধে ফেলা দুষ্কর।
৮ ঘণ্টা আগেনব্বইয়ের ক্লান্তি কিংবা বার্ধক্য-জরায় যতীন স্যার কখনোই নিঃসঙ্গতায় ছিলেন না। বাংলার প্রাকৃতজনের দার্শনিক জ্ঞান ও শান্তির দ্রোণাচার্য যতীন সরকার জীবনের শেষ দিনগুলোতে সাতপাই, রামকৃষ্ণ রোডের 'বানপ্রস্থ' নামের বাড়িতে মানুষের সান্নিধ্যেই থাকতেন।
১ দিন আগেতারেক মাসুদ নামটি খুব নৈর্ব্যক্তিকভাবে উচ্চারণ করা আমার জন্যে সহজ কাজ নয়। আমি তাঁর ছাত্র, অনুসারী, সহযোগী বা উত্তরসূরি হলেও অন্য অনেকের মতোই আমিও তাঁকে তারেক ভাই বলে ডাকতাম। কিন্তু এই ভাই ডাকার অভ্যস্ততা দীর্ঘদিনের অভ্যাসে এত গভীরে প্রোত্থিত যে আনুষ্ঠানিক কারণেও শুধু নামটি উচ্চারণে আমার অস্বস্তি হয়।
১ দিন আগেমাত্র ২৮ বছরের তরুণ ছিলেন আল-জাজিরার ফিলিস্তিনি প্রতিবেদক আনাস আল শরীফ। স্পষ্টতার সঙ্গে তুলে ধরতেন ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার অমানবিক রূপ। তাঁর প্রতিবেদনে প্রাণহীন শুষ্ক তথ্য ছাড়িয়ে উঠে আসত অবরুদ্ধ জীবনের নিখাদ ও অনাবৃত প্রতিচ্ছবি।
২ দিন আগে