অবশেষে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হচ্ছে জুলাই সনদের খসড়া। আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদ পাঠানোর কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। কমিশনের একটি সূত্র জানায়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরবেন। তখন তাঁর হাতে জুলাই সনদের খসড়া তুলে দেওয়া হবে। কী আছে জুলাই সনদের খসড়ায়। জানুন আদ্যোপান্ত।
স্ট্রিম প্রতিবেদক
জাতীয় (জুলাই) সনদের বৈধতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন না তোলার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে অঙ্গীকার নিতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ ছাড়া অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য যেসব সুপারিশ রয়েছে সনদে, সেগুলো আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষার পূর্ণ নিশ্চয়তা দেওয়ার শর্ত রাখা হচ্ছে জুলাই সনদের খসড়ায়। পাশাপাশি, সনদের কোনো বিষয় সংবিধান কিংবা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে, সেক্ষেত্রে সনদকেই প্রাধান্য দেওয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে অঙ্গীকার আদায় করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুই দফা সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা ৮২ দফার সমন্বিত খসড়া এবং খসড়া বাস্তবায়নের ৯ দফা অঙ্গীকারে এসব বিধান রাখা হয়েছে।
আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদ পাঠানোর কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। কমিশনের একটি সূত্র জানায়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরবেন। তখন তাঁর হাতে জুলাই সনদের খসড়া তুলে দেওয়া হবে। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়ার কপি পাঠানো হবে।
যেভাবে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের জন্য প্রথমধাপে ৬টি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। পরে সেই ৬ কমিশনের সমন্বয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। সেই কমিশনের প্রধান হিসেবে আছেন ড. ইউনূস। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করবে। তার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ পরিচালিত হবে।
দুই দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা
গত মার্চ মাসে ৩২টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে প্রথম ধাপে ১৬৬টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। সেখানে ৬২টি প্রস্তাবে দলগুলো ঐকমত্য হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপের দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে ২০টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন; যার মধ্যে ৯টিতে বিএনপি-জামায়াত ও এনসিপি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেয়। নোট অব ডিসেন্ট হচ্ছে, ভিন্নমত বা আপত্তি, যা লিখিত আকারে উপস্থাপন করা হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হওয়া ৮২টি প্রস্তাব নিয়ে গত ২৮ জুলাই দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের প্রাথমিক খসড়া দেওয়া হয়। খসড়ার ৩ নম্বর দফা ছিল—পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে সনদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে রাজনৈতিক দলগুলো।
এই প্রস্তাবে বিএনপিসহ তাদের সমমনা কয়েকটি দল সমর্থন করে। কিন্তু এতে আপত্তি জানায় জামায়াত, এনসিপি, ইসলামি আন্দোলনসহ অধিকাংশ দল। তারা জুলাই সনদ বর্তমান সরকারের সময়ে বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি তোলে। তা না হলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার হুমকিও দেয়। এরই প্রেক্ষিতে কমিশনের পক্ষ থেকে জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরিতে পুনরায় আলোচনার কথা জানানো হয়।
কী আছে জুলাই সনদের খসড়ায়
গত ১০ ও ১২ আগস্ট সংবিধান ও আইনজ্ঞদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ৯ দফা অঙ্গীকারনামা প্রস্তুত করেছে বলেও জানা গেছে কমিশনের সূত্রে।
ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং আইনি ভিত্তি কীভাবে দেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব এসেছে।’ তবে এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার অঙ্গীকারগুলো চূড়ান্ত হয়নি বলেও দাবি করেন বদিউল আলম।
ঐকমত্য কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদের সমন্বিত খসড়ায় গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি উল্লেখ করার পাশাপাশি সংস্কার কমিশন গঠনের প্রক্রিয়াসহ দুই ধাপের সংলাপে ঐকমত্য হওয়া ৮২টি বিষয় থাকবে। এ ছাড়া কোন কোন রাজনৈতিক দল কোন প্রস্তাবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে তা উল্লেখ থাকবে। একই সঙ্গে সনদ বাস্তবায়নের ৯ দফার অঙ্গীকারনামা থাকবে; যার ভিত্তিতে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো।
অঙ্গীকারনামায় জুলাই সনদের ব্যাখ্যা, প্রয়োগ ও বৈধতা সংক্রান্ত বিষয়গুলোর এখতিয়ার আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকা এবং সনদকে সম্পূর্ণ আইনগতভাবে কার্যকর হিসেবে গণ্য করা, তার বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা কিংবা জারির কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে আদালতেও প্রশ্ন তোলা যাবে না বলে উল্লেখ রাখা হয়েছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষার পূর্ণ নিশ্চয়তা দেওয়ার পাশাপাশি সনদের কোনও শব্দ, বাক্য ও নীতিমালা সংবিধান বা অন্য কোনও আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে সনদকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা থাকছে অঙ্গীকারনামায়।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে সমন্বিত খসড়ায় অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো কালক্ষেপণ না করে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়নের যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও উল্লেখ করা আছে।
ঐকমত্য কমিশন সূত্র আরও জানিয়েছে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দীর্ঘ আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে হাজারও মানুষের জীবনদান, অগণিত মানুষের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে জনআকাঙ্ক্ষার জুলাই জাতীয় সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার কথা সনদের অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
জনগণের সার্বজনীন অভিপ্রায়ে তৈরি করা সনদের সব বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানের ৯৩ (২) অনুচ্ছেদ বা অন্য কোনও আইন বা রায় থাকা সত্ত্বেও কার্যকর ও প্রাধান্য লাভ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সম্বলিত অধ্যাদেশ জারি করার ওয়াদা রয়েছে সমন্বিত খসড়ায়।
ঐকমত্য কমিশনের সূত্র জানিয়েছে, জুলাই সনদের খসড়ায় দেশের শাসনব্যবস্থা তথা সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, লিখন ও পুনর্লিখন এবং বিদ্যমান আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন, লিখন, পুনর্লিখন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধনের কথা রয়েছে।
কী আছে ৯ দফা অঙ্গীকারনামায়
অঙ্গীকারনামায় গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে সংবিধানে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং গণঅভ্যুত্থানের সময়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দলগুলোর কাছে অঙ্গীকার নেওয়া হবে।
কমিশনের একজন সদস্য জানান, জুলাই সনদের আইনি বাধ্যবাধকতা নিশ্চিতে গত ১০ আগস্ট ৬ জন বিশেষায়িত বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বিশেষজ্ঞদের লিখিতভাবে তাঁদের পরামর্শ দিতে অনুরোধ করা হয়।
কমিশনের ওই সদস্য আরও বলেন, ওই সুপারিশ এবং জুলাই সদনের খসড়া নিয়ে ওই দিনই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা চিন্তা রয়েছে কমিশনের।
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং আইনি ভিত্তির বিধানগুলো নিয়ে তৃতীয় ধাপে কবে থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশন বৈঠক করবে জানতে চাইলে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এই বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
জাতীয় (জুলাই) সনদের বৈধতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন না তোলার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে অঙ্গীকার নিতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ ছাড়া অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য যেসব সুপারিশ রয়েছে সনদে, সেগুলো আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষার পূর্ণ নিশ্চয়তা দেওয়ার শর্ত রাখা হচ্ছে জুলাই সনদের খসড়ায়। পাশাপাশি, সনদের কোনো বিষয় সংবিধান কিংবা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে, সেক্ষেত্রে সনদকেই প্রাধান্য দেওয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে অঙ্গীকার আদায় করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুই দফা সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা ৮২ দফার সমন্বিত খসড়া এবং খসড়া বাস্তবায়নের ৯ দফা অঙ্গীকারে এসব বিধান রাখা হয়েছে।
আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদ পাঠানোর কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। কমিশনের একটি সূত্র জানায়, আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরবেন। তখন তাঁর হাতে জুলাই সনদের খসড়া তুলে দেওয়া হবে। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়ার কপি পাঠানো হবে।
যেভাবে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের জন্য প্রথমধাপে ৬টি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। পরে সেই ৬ কমিশনের সমন্বয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। সেই কমিশনের প্রধান হিসেবে আছেন ড. ইউনূস। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করবে। তার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ পরিচালিত হবে।
দুই দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা
গত মার্চ মাসে ৩২টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে প্রথম ধাপে ১৬৬টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। সেখানে ৬২টি প্রস্তাবে দলগুলো ঐকমত্য হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপের দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে ২০টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয় কমিশন; যার মধ্যে ৯টিতে বিএনপি-জামায়াত ও এনসিপি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেয়। নোট অব ডিসেন্ট হচ্ছে, ভিন্নমত বা আপত্তি, যা লিখিত আকারে উপস্থাপন করা হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হওয়া ৮২টি প্রস্তাব নিয়ে গত ২৮ জুলাই দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের প্রাথমিক খসড়া দেওয়া হয়। খসড়ার ৩ নম্বর দফা ছিল—পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে সনদের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে রাজনৈতিক দলগুলো।
এই প্রস্তাবে বিএনপিসহ তাদের সমমনা কয়েকটি দল সমর্থন করে। কিন্তু এতে আপত্তি জানায় জামায়াত, এনসিপি, ইসলামি আন্দোলনসহ অধিকাংশ দল। তারা জুলাই সনদ বর্তমান সরকারের সময়ে বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার দাবি তোলে। তা না হলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার হুমকিও দেয়। এরই প্রেক্ষিতে কমিশনের পক্ষ থেকে জুলাই সনদ দ্রুত বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরিতে পুনরায় আলোচনার কথা জানানো হয়।
কী আছে জুলাই সনদের খসড়ায়
গত ১০ ও ১২ আগস্ট সংবিধান ও আইনজ্ঞদের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ৯ দফা অঙ্গীকারনামা প্রস্তুত করেছে বলেও জানা গেছে কমিশনের সূত্রে।
ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং আইনি ভিত্তি কীভাবে দেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব এসেছে।’ তবে এখন পর্যন্ত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার অঙ্গীকারগুলো চূড়ান্ত হয়নি বলেও দাবি করেন বদিউল আলম।
ঐকমত্য কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদের সমন্বিত খসড়ায় গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি উল্লেখ করার পাশাপাশি সংস্কার কমিশন গঠনের প্রক্রিয়াসহ দুই ধাপের সংলাপে ঐকমত্য হওয়া ৮২টি বিষয় থাকবে। এ ছাড়া কোন কোন রাজনৈতিক দল কোন প্রস্তাবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে তা উল্লেখ থাকবে। একই সঙ্গে সনদ বাস্তবায়নের ৯ দফার অঙ্গীকারনামা থাকবে; যার ভিত্তিতে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো।
অঙ্গীকারনামায় জুলাই সনদের ব্যাখ্যা, প্রয়োগ ও বৈধতা সংক্রান্ত বিষয়গুলোর এখতিয়ার আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকা এবং সনদকে সম্পূর্ণ আইনগতভাবে কার্যকর হিসেবে গণ্য করা, তার বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা কিংবা জারির কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে আদালতেও প্রশ্ন তোলা যাবে না বলে উল্লেখ রাখা হয়েছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষার পূর্ণ নিশ্চয়তা দেওয়ার পাশাপাশি সনদের কোনও শব্দ, বাক্য ও নীতিমালা সংবিধান বা অন্য কোনও আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে সনদকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা থাকছে অঙ্গীকারনামায়।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে সমন্বিত খসড়ায় অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো কালক্ষেপণ না করে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়নের যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও উল্লেখ করা আছে।
ঐকমত্য কমিশন সূত্র আরও জানিয়েছে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দীর্ঘ আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে হাজারও মানুষের জীবনদান, অগণিত মানুষের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে জনআকাঙ্ক্ষার জুলাই জাতীয় সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার কথা সনদের অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
জনগণের সার্বজনীন অভিপ্রায়ে তৈরি করা সনদের সব বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানের ৯৩ (২) অনুচ্ছেদ বা অন্য কোনও আইন বা রায় থাকা সত্ত্বেও কার্যকর ও প্রাধান্য লাভ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সম্বলিত অধ্যাদেশ জারি করার ওয়াদা রয়েছে সমন্বিত খসড়ায়।
ঐকমত্য কমিশনের সূত্র জানিয়েছে, জুলাই সনদের খসড়ায় দেশের শাসনব্যবস্থা তথা সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, লিখন ও পুনর্লিখন এবং বিদ্যমান আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন, লিখন, পুনর্লিখন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধনের কথা রয়েছে।
কী আছে ৯ দফা অঙ্গীকারনামায়
অঙ্গীকারনামায় গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে সংবিধানে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং গণঅভ্যুত্থানের সময়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দলগুলোর কাছে অঙ্গীকার নেওয়া হবে।
কমিশনের একজন সদস্য জানান, জুলাই সনদের আইনি বাধ্যবাধকতা নিশ্চিতে গত ১০ আগস্ট ৬ জন বিশেষায়িত বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বিশেষজ্ঞদের লিখিতভাবে তাঁদের পরামর্শ দিতে অনুরোধ করা হয়।
কমিশনের ওই সদস্য আরও বলেন, ওই সুপারিশ এবং জুলাই সদনের খসড়া নিয়ে ওই দিনই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা চিন্তা রয়েছে কমিশনের।
জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং আইনি ভিত্তির বিধানগুলো নিয়ে তৃতীয় ধাপে কবে থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশন বৈঠক করবে জানতে চাইলে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এই বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
সিদ্ধান্তগুলো হলো— জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদা পাথর এলাকায় ২৪ ঘন্টা যৌথবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে; গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে যৌথ বাহিনীসহ পুলিশের চেকপোস্ট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে; অবৈধ ক্রাশিং মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ পাথর ভাঙা বন্ধ করার জন্য অভিযান চলমান থাকবে; পাথর চুরির সাথে জড়িত সকলকে চিহ্নিত
৩ ঘণ্টা আগেগ্যাস পাইপলাইনের স্থানান্তর কাজের জন্য আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ১১ ঘণ্টা ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।
৭ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ও ছয়জন ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বুধবার (১৩ আগস্ট) ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগের অংশ হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধের ভিত্তিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগেমালয়েশিয়ায় তিন দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
৮ ঘণ্টা আগে