আল-জাজিরার বিশ্লেষণ
স্ট্রিম ডেস্ক
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ধর্মস্থল মন্দির চত্বরে শতাধিক হত্যা ও গণকবরের অভিযোগে ভারতজুড়ে তীব্র আলোচনা ও তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ বিষয়ে চাঞ্চল্যকর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ১২ বছর আত্মগোপনে থাকার পর ৪৮ বছর বয়সী দলিত সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি গত ৩ জুলাই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। আদালতের নির্দেশে তাঁর পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
ওই কর্মীর দাবি, ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ধর্মস্থল মন্দিরে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ওই সময়ে তাঁকে ভয় দেখিয়ে, মারধর করে ও পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়ে কয়েক শ মৃতদেহ গণকবর দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। মৃতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। তাদের শরীরে তিনি যৌন নির্যাতন ও আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন।
অভিযোগের পর থেকে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার চাপ ও জনরোষে কংগ্রেস পার্টি শাসিত কর্নাটক সরকার যৌন নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করেছে।
ধর্মস্থল কর্ণাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার বেলথাঙ্গাড়ি এলাকার নেত্রাবতী নদীর তীরে অবস্থিত প্রায় ৮০০ বছরের পুরোনো একটি তীর্থস্থান। প্রতিদিন এখানে প্রায় দুই হাজার ভক্ত আসেন।
চলতি মাসের ১১ জুলাই ওই ব্যক্তি বেলথাঙ্গাড়ির স্থানীয় আদালতে নিজের বিবৃতি রেকর্ড করেন। অভিযোগকারী জানান, পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করার সময় মন্দিরের পাশের নদীর ধারে ও আশপাশে প্রায়ই নগ্ন ও অর্ধনগ্ন অবস্থায় নারীর মরদেহ দেখতে পেতেন। মৃতদেহে যৌন নিপীড়নের চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। বহু মরদেহে অ্যাসিডে পোড়ানোর চিহ্নও ছিল।
তিনি দাবি করেন, বহুবার তাঁকে ১৩–১৫ বছর বয়সী কিশোরীদের মরদেহ কবর দিতে বাধ্য করা হয়েছে। ২০১০ সালে তাঁকে ধর্মস্থল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে পাঠানো হয়। কাল্লেরি এলাকার এক পেট্রল পাম্প থেকে ৫০০ মিটার দূরের সেই স্থানে ১২-১৫ বছর বয়সী কিশোরীর লাশ কবর দিতে বলা হয়। কিশোরীর পরনে ছিল স্কুলের ইউনিফর্ম। শরীরে যৌন নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। গলায় ছিল শ্বাসরোধের চিহ্ন। কিশোরীর মরদেহের পাশেই তার স্কুলব্যাগও কবর দিতে বলা হয়েছিল।
আরেকটি ঘটনায় তিনি বলেন, মুখ অ্যাসিডে পোড়া ও শরীর সংবাদপত্র দিয়ে ঢাকা এক তরুণীর মৃতদেহ সম্পূর্ণ পুড়িয়ে ফেলতে বলা হয়েছিল যাতে কোনো প্রমাণ না থাকে।
কোনোভাবে এসব ঘটনা জানাজানি হলে তাঁকে ‘পরিবারসহ বলি দেওয়া’র হুমকি দেওয়া হতো। এ সব থেকে বাঁচতে ২০১৪ সালে পরিবারসহ গা-ঢাকা দেন এবং পরবর্তী ১২ বছর আত্মগোপনে ছিলেন।
নিজের দাবির সত্যতা প্রমাণ করার জন্য ‘ব্রেইন ম্যাপিং’, পলিগ্রাফসহ যেকোনো ধরনের স্বীকারোক্তি দিতেও তিনি আদালত ও পুলিশকে সম্মতি দিয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানের গণকবরগুলোকেও তিনি চিহ্নিত করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
সম্প্রতি নিজের দাবির পক্ষে প্রমাণ হিসেবে এক গণকবরস্থল থেকে উত্তোলিত কঙ্কাল ও তার ছবি আদালতে জমা দিয়েছেন তিনি। তদন্তের অংশ হিসেবে কয়েকটি স্থানে খননের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা গেছে।
কেন এতদিন আত্মগোপনে ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওই ব্যক্তি জানান, ২০ বছর ধরে এসব দেখতে দেখতে এবং না চাইতেও তার অংশ হতে হতে তিনি আর সহ্য করতে পারছিলেন না। তারপর মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি যখন তাঁর পরিবারের এক কিশোরীকে যৌন হয়রানি করে তখন তিনি বুঝতে পারেন, আর সম্ভব নয়। পরিবারকে নিয়ে পালাতে হবে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি পরিবারসহ ধর্মস্থল ছেড়ে যান। এরপর থেকে পাশের রাজ্যে আত্মগোপনে আছেন।
আত্মসমর্পণের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘অপরাধবোধ আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। বিবেক আমাকে আর চুপ থাকতে দিচ্ছিল না।’
ধর্মস্থল মন্দির দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী হেগড়ে পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। ১৯৬৮ সাল থেকে মন্দিরের ২১তম ধর্মাধিকারী হিসেবে দায়িত্বে আছেন বীরেন্দ্র হেগড়ে।
২০১৫ সালে বীরেন্দ্র হেগড়ে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ লাভ করেন। ২০২২ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তাঁকে রাজ্যসভার সদস্য মনোনীত করে।
২০১২ সালে ১৭ বছর বয়সী সৌজন্যার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর হেগড়ে পরিবার আলোচনায় আসে। সৌজন্যার পরিবার বারবার অভিযোগ করে আসছে, এই ঘটনায় জড়িত অপরাধীরা মন্দিরের প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে যুক্ত।
গত রোববার (২০ জুলাই) মন্দির কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘ন্যায়সংগত ও স্বচ্ছ তদন্তে যত্নের প্রতিচ্ছবি দেখাবে এবং সত্য উদ্ঘাটনের প্রত্যাশা করছে।’
মন্দিরের মুখপাত্র কে পারশ্বনাথ জৈন বলেন, ‘এমন অভিযোগ দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি করেছে। আমরা চাই তদন্ত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হোক ও আসল সত্য প্রকাশিত হোক।’
২০০৩ সালে নিখোঁজ হওয়া মেডিকেল শিক্ষার্থী অনন্যা ভাটের মা সুজাতা ভাট গত সপ্তাহে আবারও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। গণমাধ্যমে এ বিষয়ে শোরগোল ও কঙ্কাল উদ্ধারের খবর শোনার পর তিনি নতুন করে তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের হাড়গোড় খুঁজে দিন, যাতে অন্তত সৎকার করতে পারি। আমি চাই আমার মেয়ে শান্তি পাক, আর আমি যেন বাকি জীবনটা অন্তত একটু স্বস্তিতে কাটাতে পারি।’
এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও সত্য উদ্ঘাটনের দাবিতে এখন উত্তাল গোটা কর্ণাটক।
১৯৮০-এর দশক থেকে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার মৃতদেহ ধর্মস্থলের আশেপাশে মিলেছে। এ নিয়ে বারবার প্রতিবাদ হয়েছে।
১৯৮৭ সালে ১৭ বছর বয়সী পদ্মলতার ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন হয়েছিল। প্রভাবশালীদের ভূমিকা গোপন করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই সময় ভয়ভীতি ও আইনি চাপ দিয়ে আন্দোলন দমন করা হয়।
বছরের পর বছর মৃত ও নিখোঁজদের পরিবার ও স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন আন্দোলন চালিয়েছে। ২০১২ সালে ‘সৌজন্যার জন্য ন্যায়বিচার’ আন্দোলনে শহর আবার উত্তাল হয়। আজও এই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি।
কর্ণাটক হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী এস বালান আল-জাজিরাকে বলেন, ‘ধর্মস্থলে হত্যাকাণ্ড ও রহস্যময় নিখোঁজের ইতিহাস ১৯৭৯ সাল থেকে। শত শত কিশোরী নিখোঁজ হয়েছিল, অপহৃত হয়েছিল, ধর্ষিত হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের আত্মা ন্যায়বিচারের জন্য কাঁদছে। ভারত তাঁর স্বাধীনতার পর এমন ভয়াবহ অপরাধ দেখেনি।’
(কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় প্রকাশিত যশরাজ শর্মার প্রতিবেদন থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ করেছেন তুফায়েল আহমদ)
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ধর্মস্থল মন্দির চত্বরে শতাধিক হত্যা ও গণকবরের অভিযোগে ভারতজুড়ে তীব্র আলোচনা ও তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ বিষয়ে চাঞ্চল্যকর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ১২ বছর আত্মগোপনে থাকার পর ৪৮ বছর বয়সী দলিত সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি গত ৩ জুলাই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। আদালতের নির্দেশে তাঁর পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
ওই কর্মীর দাবি, ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ধর্মস্থল মন্দিরে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ওই সময়ে তাঁকে ভয় দেখিয়ে, মারধর করে ও পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়ে কয়েক শ মৃতদেহ গণকবর দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। মৃতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। তাদের শরীরে তিনি যৌন নির্যাতন ও আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন।
অভিযোগের পর থেকে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার চাপ ও জনরোষে কংগ্রেস পার্টি শাসিত কর্নাটক সরকার যৌন নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করেছে।
ধর্মস্থল কর্ণাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার বেলথাঙ্গাড়ি এলাকার নেত্রাবতী নদীর তীরে অবস্থিত প্রায় ৮০০ বছরের পুরোনো একটি তীর্থস্থান। প্রতিদিন এখানে প্রায় দুই হাজার ভক্ত আসেন।
চলতি মাসের ১১ জুলাই ওই ব্যক্তি বেলথাঙ্গাড়ির স্থানীয় আদালতে নিজের বিবৃতি রেকর্ড করেন। অভিযোগকারী জানান, পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করার সময় মন্দিরের পাশের নদীর ধারে ও আশপাশে প্রায়ই নগ্ন ও অর্ধনগ্ন অবস্থায় নারীর মরদেহ দেখতে পেতেন। মৃতদেহে যৌন নিপীড়নের চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। বহু মরদেহে অ্যাসিডে পোড়ানোর চিহ্নও ছিল।
তিনি দাবি করেন, বহুবার তাঁকে ১৩–১৫ বছর বয়সী কিশোরীদের মরদেহ কবর দিতে বাধ্য করা হয়েছে। ২০১০ সালে তাঁকে ধর্মস্থল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে পাঠানো হয়। কাল্লেরি এলাকার এক পেট্রল পাম্প থেকে ৫০০ মিটার দূরের সেই স্থানে ১২-১৫ বছর বয়সী কিশোরীর লাশ কবর দিতে বলা হয়। কিশোরীর পরনে ছিল স্কুলের ইউনিফর্ম। শরীরে যৌন নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। গলায় ছিল শ্বাসরোধের চিহ্ন। কিশোরীর মরদেহের পাশেই তার স্কুলব্যাগও কবর দিতে বলা হয়েছিল।
আরেকটি ঘটনায় তিনি বলেন, মুখ অ্যাসিডে পোড়া ও শরীর সংবাদপত্র দিয়ে ঢাকা এক তরুণীর মৃতদেহ সম্পূর্ণ পুড়িয়ে ফেলতে বলা হয়েছিল যাতে কোনো প্রমাণ না থাকে।
কোনোভাবে এসব ঘটনা জানাজানি হলে তাঁকে ‘পরিবারসহ বলি দেওয়া’র হুমকি দেওয়া হতো। এ সব থেকে বাঁচতে ২০১৪ সালে পরিবারসহ গা-ঢাকা দেন এবং পরবর্তী ১২ বছর আত্মগোপনে ছিলেন।
নিজের দাবির সত্যতা প্রমাণ করার জন্য ‘ব্রেইন ম্যাপিং’, পলিগ্রাফসহ যেকোনো ধরনের স্বীকারোক্তি দিতেও তিনি আদালত ও পুলিশকে সম্মতি দিয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানের গণকবরগুলোকেও তিনি চিহ্নিত করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
সম্প্রতি নিজের দাবির পক্ষে প্রমাণ হিসেবে এক গণকবরস্থল থেকে উত্তোলিত কঙ্কাল ও তার ছবি আদালতে জমা দিয়েছেন তিনি। তদন্তের অংশ হিসেবে কয়েকটি স্থানে খননের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা গেছে।
কেন এতদিন আত্মগোপনে ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওই ব্যক্তি জানান, ২০ বছর ধরে এসব দেখতে দেখতে এবং না চাইতেও তার অংশ হতে হতে তিনি আর সহ্য করতে পারছিলেন না। তারপর মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি যখন তাঁর পরিবারের এক কিশোরীকে যৌন হয়রানি করে তখন তিনি বুঝতে পারেন, আর সম্ভব নয়। পরিবারকে নিয়ে পালাতে হবে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি পরিবারসহ ধর্মস্থল ছেড়ে যান। এরপর থেকে পাশের রাজ্যে আত্মগোপনে আছেন।
আত্মসমর্পণের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘অপরাধবোধ আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। বিবেক আমাকে আর চুপ থাকতে দিচ্ছিল না।’
ধর্মস্থল মন্দির দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী হেগড়ে পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। ১৯৬৮ সাল থেকে মন্দিরের ২১তম ধর্মাধিকারী হিসেবে দায়িত্বে আছেন বীরেন্দ্র হেগড়ে।
২০১৫ সালে বীরেন্দ্র হেগড়ে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ লাভ করেন। ২০২২ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তাঁকে রাজ্যসভার সদস্য মনোনীত করে।
২০১২ সালে ১৭ বছর বয়সী সৌজন্যার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর হেগড়ে পরিবার আলোচনায় আসে। সৌজন্যার পরিবার বারবার অভিযোগ করে আসছে, এই ঘটনায় জড়িত অপরাধীরা মন্দিরের প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে যুক্ত।
গত রোববার (২০ জুলাই) মন্দির কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘ন্যায়সংগত ও স্বচ্ছ তদন্তে যত্নের প্রতিচ্ছবি দেখাবে এবং সত্য উদ্ঘাটনের প্রত্যাশা করছে।’
মন্দিরের মুখপাত্র কে পারশ্বনাথ জৈন বলেন, ‘এমন অভিযোগ দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি করেছে। আমরা চাই তদন্ত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হোক ও আসল সত্য প্রকাশিত হোক।’
২০০৩ সালে নিখোঁজ হওয়া মেডিকেল শিক্ষার্থী অনন্যা ভাটের মা সুজাতা ভাট গত সপ্তাহে আবারও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। গণমাধ্যমে এ বিষয়ে শোরগোল ও কঙ্কাল উদ্ধারের খবর শোনার পর তিনি নতুন করে তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের হাড়গোড় খুঁজে দিন, যাতে অন্তত সৎকার করতে পারি। আমি চাই আমার মেয়ে শান্তি পাক, আর আমি যেন বাকি জীবনটা অন্তত একটু স্বস্তিতে কাটাতে পারি।’
এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও সত্য উদ্ঘাটনের দাবিতে এখন উত্তাল গোটা কর্ণাটক।
১৯৮০-এর দশক থেকে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার মৃতদেহ ধর্মস্থলের আশেপাশে মিলেছে। এ নিয়ে বারবার প্রতিবাদ হয়েছে।
১৯৮৭ সালে ১৭ বছর বয়সী পদ্মলতার ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন হয়েছিল। প্রভাবশালীদের ভূমিকা গোপন করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই সময় ভয়ভীতি ও আইনি চাপ দিয়ে আন্দোলন দমন করা হয়।
বছরের পর বছর মৃত ও নিখোঁজদের পরিবার ও স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন আন্দোলন চালিয়েছে। ২০১২ সালে ‘সৌজন্যার জন্য ন্যায়বিচার’ আন্দোলনে শহর আবার উত্তাল হয়। আজও এই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি।
কর্ণাটক হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী এস বালান আল-জাজিরাকে বলেন, ‘ধর্মস্থলে হত্যাকাণ্ড ও রহস্যময় নিখোঁজের ইতিহাস ১৯৭৯ সাল থেকে। শত শত কিশোরী নিখোঁজ হয়েছিল, অপহৃত হয়েছিল, ধর্ষিত হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের আত্মা ন্যায়বিচারের জন্য কাঁদছে। ভারত তাঁর স্বাধীনতার পর এমন ভয়াবহ অপরাধ দেখেনি।’
(কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় প্রকাশিত যশরাজ শর্মার প্রতিবেদন থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ করেছেন তুফায়েল আহমদ)
ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে বসবে পরাশক্তি দুই দেশ। কিন্তু স্থান হিসেবে ট্রাম্প কেন আলাস্কাকেই বেছে নিলেন?
৬ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত সোমবার (১১ আগস্ট) মালয়েশিয়ায় যান। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই সফরের মূল লক্ষ্য অভিবাসন সহজ করা এবং বিনিয়োগ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন করা।
১ দিন আগেগত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার হয়। ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয় ভারত। পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছিল।
১ দিন আগেভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতিতে ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন প্রভাবশালী এক চরিত্র। বাবা জওহরলাল নেহেরুর হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ‘প্রিয়দর্শিনী’ ইন্দিরা। ভারতীয় কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য থেকে রাজনীতির জীবন শুরু করে টানা ১১ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
২ দিন আগে