leadT1ad

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান

জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ ঘোষণার নির্দেশ হাইকোর্টের

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআর ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বিশ্লেষণ করে একটি ফ্যাক্ট–ফাইন্ডিং প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে গুরুতর আহতদের বয়ান ও বহু বিক্ষোভকারীর সাক্ষাৎকার অন্তর্ভুক্ত ছিল।

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ৪৮
হাইকোর্ট ভবন। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) ‘ফ্যাক্ট–ফাইন্ডিং’ প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে ঘোষণা করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে প্রতিবেদনটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জ্ঞান আহরণ ও গবেষণার উদ্দেশ্যে সংরক্ষণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে এটিকে ‘জুলাই বিপ্লব–২০২৪’ শিরোনামে সরকারিভাবে গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে অগ্রগতি প্রতিবেদন (কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট) আদালতে দাখিল করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

রিটের পটভূমি

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ গত বছরের ১৩ আগস্ট হাইকোর্টে একটি রিট করেন। রিটে অভিযোগ করা হয়, ‘ফ্যাসিবাদী শাসন’ টিকিয়ে রাখতে গিয়ে জুলাই–আগস্টে গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশনা প্রয়োজন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে ১৫ আগস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান, কেন গণহত্যার বিচার ও দায়ীদের শাস্তির নির্দেশ দেওয়া হবে না।

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআর ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বিশ্লেষণ করে একটি ফ্যাক্ট–ফাইন্ডিং প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে গুরুতর আহতদের বয়ান ও বহু বিক্ষোভকারীর সাক্ষাৎকার অন্তর্ভুক্ত ছিল। গত মে মাসে রিট আবেদনকারী সেই প্রতিবেদনটি সম্পূরক আবেদনের মাধ্যমে আদালতে জমা দেন।

সম্পূরক শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৪ মে হাইকোর্ট নতুন রুল জারি করে জানতে চান, কেন জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে না এবং কেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রমাণ হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে না। আজকের রায়ে আদালত সেই প্রশ্নের নিষ্পত্তি করে নির্দেশনা জারি করেন।

আদালতে শুনানি

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আবেদনকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ নিজেই। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, তানিম খান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

রায়ের পর আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের ফ্যাক্ট–ফাইন্ডিং প্রতিবেদনকে আদালত ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে। গেজেটের নাম হবে ‘জুলাই বিপ্লব–২০২৪’। বিষয়টি চলমান মামলা হিসেবেই থাকবে।’

রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবেদনটি দুই দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ—একদিকে এটি সাক্ষ্য–প্রমাণ, অন্যদিকে এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। তাই আদালত আইন মন্ত্রণালয়কে এটি গেজেট আকারে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। সম্পূরক রুল অ্যাবসিলিউট ঘোষণা করা হয়েছে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত