leadT1ad

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি

গত বছরের ৪ জুলাই যা যা ঘটেছিল

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৪: ২৯
৪ জুলাই শাহবাগ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: এএফপির সৌজন্যে

আজ ৪ জুলাই। গত বছরের এই দিন হাইকোর্টের দেওয়া সেই রায়ের প্রায় একমাস পূর্তি হতে চলেছে, যে রায়ে বলা হয়- ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ছিল। এদিন হাইকোর্টের দেওয়া ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই শুনানি মুলতবি হয়। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চ আদেশ দেন- ‘নট টুডে’।

সাড়ে ৫ ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ

এদিন সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। টিএসসি ঘুরে শাহবাগ মোড়ে এসে থামে মিছিলটি। পরে সেখানে অবস্থান নিয়ে নানা স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। স্লোগানের মধ্যে ছিল ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’, ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘একাত্তরের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি।

এর আগের দিনগুলোয় দুপুর থেকে বিক্ষোভ শুরু করলেও এদিন শুনানি উপলক্ষে সকাল থেকেই মাঠে নামেন আন্দোলনকারীরা। এদিন আন্দোলনে অংশ নেওয়া থেকে শিক্ষার্থীদের আটকাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হলগেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। তবে শিক্ষার্থীরা পরে তালা খুলে বেরিয়ে আসেন।

এদিন বৃষ্টি উপেক্ষা করে শাহবাগ মোড়ে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা এ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।

মুলতুবি হয় শুনানি

হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল এদিন। কিন্তু রিট আবেদনকারীপক্ষের সময়ের আর্জির কারণে ওই দিনের শুনানি মুলতবি করা হয়। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ওবায়দুল হাসান প্রশ্ন করেন, আন্দোলনের চাপ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট-হাইকোর্টের রায় পরিবর্তন করা যায় কিনা। তিনি এ সময় রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেন।

যা বলেছিলেন আন্দোলনকারীরা

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি মুলতবি হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন আন্দোলনরতরা। এদিন অবরোধ শেষে নাহিদ ইসলাম বেশ কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ছিল, শুক্রবার কোটা বাতিলের পক্ষে অনলাইন ও অফলাইনে প্রচারণা চালানো, শনিবার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ সমাবেশ, রোববারে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রাখা।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘২০১৮ সালে নির্বাহী বিভাগ পরিপত্রের মাধ্যমে কোটা বাতিল করল। বিচার বিভাগ দিয়ে কোটা আবার পুনর্বহাল করা হলো। এটা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসন। এটা রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে সমন্বয়হীনতার উদাহরণ। নির্বাহী বিভাগ আদেশ দিচ্ছে, আর বিচার বিভাগ বাতিল করছে। রাষ্ট্রযন্ত্রের অন্তর্দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক নেই।

আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে

এদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড় অবরোধ করেন। চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবরোধ করেন ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক।

তা ছাড়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুলনার জিরো পয়েন্ট, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এদিন ট্রেন আটকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

Ad 300x250

সম্পর্কিত