ফিরে দেখা গণ-অভ্যুত্থান
স্ট্রিম প্রতিবেদক
রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভয় বাড়ে। রাত যত গভীর হয়, মনে হয় দরজায় এই বুঝি কারো টোকা পড়ল। এই বুঝি কেউ জিজ্ঞেস করল, ‘বাড়িতে কে আছেন?’ মনের ভেতর জমাটবাঁধা চাপা ভয়। অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করলে নাকি ভয় কমে। কিন্তু যাত্রাবাড়ির হাসেম আলী বুঝতে পারেন না কার সঙ্গে এই ভয় ভাগাভাগি করবেন। কে শেষমেষ বাড়িতে পুলিশ ডেকে আনবে। তিনি মনে মনে ভাবেন, দিনে গুলি খাওয়ার আশঙ্কা আর রাতে গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়। ততদিনে নিহতের সংখ্যা ১৮০ ছাড়িয়েছে। হাসেম আলী মনে করতে পারেন না শেষ কবে তিনি একটি স্বাভাবিক দিন পার করেছেন। গত কয়েকদিনে যাত্রাবাড়ীতে যা দেখেছেন, আদৌ কি তিনি আর কোনোদিন স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারবেন? নিজেকে প্রশ্ন করেন হাসেম আলী।
গত বছরের ২২ জুলাই দেশে সংঘর্ষ কিছুটা কমে এসেছিল। কিন্তু ‘গ্রেপ্তার-আতঙ্ক’ তখন অন্য রূপে মানুষের কাছে ধরা দিয়েছে।
২২ জুলাই ঢাকার আদালত চত্বরগুলো গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ছিল। কেউ কেউ সৌভাগ্যবান। তাঁরা জানেন, তাঁদের স্বজন কোথায় আছেন। সবাই অতটা সৌভাগ্যবান হতে পারেননি। তাঁরা দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। সামনে পুলিশের পোশাক পরা যাকে পেয়েছেন, যাকে খানিকটা দেখে মনে হয়েছে আইনজীবী—তাঁরই হাত-পা ধরেছেন। মিনতিভরা চোখে জানতে চেয়েছেন, তাঁর স্বজনের কোনো খোঁজ বের করা সম্ভব কি না। সেই স্বজন হয়তো তাঁর বাবা, স্বামী বা ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃত মানুষদের একটা বড় অংশ ছিল শ্রমজীবী। এদের দিন এনে দিন খাওয়ার কারবার। এই গণগ্রেপ্তার তাই আক্ষরিক অর্থেই ছিল পুরো একটি পরিবারের ‘পেটে লাথি মারা’।
২১ জুলাই দিবাগত রাত থেকে ২২ জুলাই সকাল পর্যন্ত শুধু ঢাকা থেকেই ৫ শর ওপর মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়, যারা সহিংসতা ও নাশকতায় জড়িত, তাদের ধরতে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে।
১৭ জুলাই শুরু হওয়া ধরপাকড় অভিযানে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী এ গ্রেপ্তার অভিযানে ধরা পড়েন। দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে গ্রেপ্তার আতঙ্ক।
এদিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপি-জামায়াত দেশজুড়ে নাশকতা চালাচ্ছে। আর এ কাজে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সরকার নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। এ সময় ব্যবসায়ী নেতারা তাঁর পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।
বলা হয়, যাত্রাবাড়ী হলো জুলাইয়ের স্ট্যালিনগ্রাদ। ২য় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের স্ট্যালিনগ্রাদ শহর জয় যেমন গুরুত্ববহ ছিল, তাতে যেমন রক্ত ঝরেছে, জুলাইয়ের পটভূমিতে যাত্রাবাড়ীও খানিকটা তা-ই।
১৭ তারিখ থেকে টানা পাঁচদিন এই এলাকা আন্দোলনকারীদের দখলে ছিল। তবে এতে রক্তও ঝরেছে প্রচুর।
যাত্রাবাড়ী এলাকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর, ওইদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিস্থিতি পরিদর্শনে আসেন। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এ সময় জানান, সবাই মিলে কাজ করলে দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, প্রতিটি অপরাধমূলক কাজের হিসাব নেওয়া হবে।
তখন কিছু সময়ের জন্য যাত্রাবাড়ী পুলিশের দখলে ছিল। কিন্তু পরে তা আবার আন্দোলনকারীরা দখলে নেয়।
এই তারিখে কোটা সংক্রান্ত আদালতের রায় অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন অনুমোদন করা হয়। আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হলো। বাকি ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধাভিত্তিক।
২২ জুলাই ছিল কারফিউয়ের তৃতীয় দিন। ইন্টারনেট তখনও আসেনি। এদিকে সাধারণ ছুটি আরেকদিন বাড়ানো হয় (২৩ জুলাই)।
তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, পরদিন ২৩ জুলাই কারফিউ অব্যাহত থাকলেও দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তা শিথিল থাকবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানান।
রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভয় বাড়ে। রাত যত গভীর হয়, মনে হয় দরজায় এই বুঝি কারো টোকা পড়ল। এই বুঝি কেউ জিজ্ঞেস করল, ‘বাড়িতে কে আছেন?’ মনের ভেতর জমাটবাঁধা চাপা ভয়। অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করলে নাকি ভয় কমে। কিন্তু যাত্রাবাড়ির হাসেম আলী বুঝতে পারেন না কার সঙ্গে এই ভয় ভাগাভাগি করবেন। কে শেষমেষ বাড়িতে পুলিশ ডেকে আনবে। তিনি মনে মনে ভাবেন, দিনে গুলি খাওয়ার আশঙ্কা আর রাতে গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়। ততদিনে নিহতের সংখ্যা ১৮০ ছাড়িয়েছে। হাসেম আলী মনে করতে পারেন না শেষ কবে তিনি একটি স্বাভাবিক দিন পার করেছেন। গত কয়েকদিনে যাত্রাবাড়ীতে যা দেখেছেন, আদৌ কি তিনি আর কোনোদিন স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারবেন? নিজেকে প্রশ্ন করেন হাসেম আলী।
গত বছরের ২২ জুলাই দেশে সংঘর্ষ কিছুটা কমে এসেছিল। কিন্তু ‘গ্রেপ্তার-আতঙ্ক’ তখন অন্য রূপে মানুষের কাছে ধরা দিয়েছে।
২২ জুলাই ঢাকার আদালত চত্বরগুলো গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ছিল। কেউ কেউ সৌভাগ্যবান। তাঁরা জানেন, তাঁদের স্বজন কোথায় আছেন। সবাই অতটা সৌভাগ্যবান হতে পারেননি। তাঁরা দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। সামনে পুলিশের পোশাক পরা যাকে পেয়েছেন, যাকে খানিকটা দেখে মনে হয়েছে আইনজীবী—তাঁরই হাত-পা ধরেছেন। মিনতিভরা চোখে জানতে চেয়েছেন, তাঁর স্বজনের কোনো খোঁজ বের করা সম্ভব কি না। সেই স্বজন হয়তো তাঁর বাবা, স্বামী বা ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃত মানুষদের একটা বড় অংশ ছিল শ্রমজীবী। এদের দিন এনে দিন খাওয়ার কারবার। এই গণগ্রেপ্তার তাই আক্ষরিক অর্থেই ছিল পুরো একটি পরিবারের ‘পেটে লাথি মারা’।
২১ জুলাই দিবাগত রাত থেকে ২২ জুলাই সকাল পর্যন্ত শুধু ঢাকা থেকেই ৫ শর ওপর মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়, যারা সহিংসতা ও নাশকতায় জড়িত, তাদের ধরতে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে।
১৭ জুলাই শুরু হওয়া ধরপাকড় অভিযানে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী এ গ্রেপ্তার অভিযানে ধরা পড়েন। দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে গ্রেপ্তার আতঙ্ক।
এদিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিএনপি-জামায়াত দেশজুড়ে নাশকতা চালাচ্ছে। আর এ কাজে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সরকার নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। এ সময় ব্যবসায়ী নেতারা তাঁর পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।
বলা হয়, যাত্রাবাড়ী হলো জুলাইয়ের স্ট্যালিনগ্রাদ। ২য় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের স্ট্যালিনগ্রাদ শহর জয় যেমন গুরুত্ববহ ছিল, তাতে যেমন রক্ত ঝরেছে, জুলাইয়ের পটভূমিতে যাত্রাবাড়ীও খানিকটা তা-ই।
১৭ তারিখ থেকে টানা পাঁচদিন এই এলাকা আন্দোলনকারীদের দখলে ছিল। তবে এতে রক্তও ঝরেছে প্রচুর।
যাত্রাবাড়ী এলাকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর, ওইদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিস্থিতি পরিদর্শনে আসেন। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এ সময় জানান, সবাই মিলে কাজ করলে দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, প্রতিটি অপরাধমূলক কাজের হিসাব নেওয়া হবে।
তখন কিছু সময়ের জন্য যাত্রাবাড়ী পুলিশের দখলে ছিল। কিন্তু পরে তা আবার আন্দোলনকারীরা দখলে নেয়।
এই তারিখে কোটা সংক্রান্ত আদালতের রায় অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন অনুমোদন করা হয়। আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছিল, মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ; ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হলো। বাকি ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধাভিত্তিক।
২২ জুলাই ছিল কারফিউয়ের তৃতীয় দিন। ইন্টারনেট তখনও আসেনি। এদিকে সাধারণ ছুটি আরেকদিন বাড়ানো হয় (২৩ জুলাই)।
তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, পরদিন ২৩ জুলাই কারফিউ অব্যাহত থাকলেও দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তা শিথিল থাকবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানান।
শুক্রবারের মধ্যে আন্দোলন বন্ধ না হলে শনিবার থেকে তাঁরা লাগাতার কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শেবাচিম কর্মচারীদের সংগঠন।
৩৮ মিনিট আগেবুধবার রাতেই সাড়ে ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করে আগের অবস্থানে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সাদাপাথরবাহী আরও ১৩০টিরও বেশি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। এই পাথরগুলোও আগের জায়গায় বিছিয়ে রাখা হবে।
১ ঘণ্টা আগেমালয়েশিয়ার স্থানীয় শ্রমিকেরা যেসব সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা পান, বাংলাদেশি শ্রমিকেরা এখন থেকে একই সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক মালয়েশিয়া সফরে বাংলা ভাষায় অভিযোগ করতে পারার সুবিধাপ্রাপ্তির ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেনেত্রকোনা পৌর শহরের নাগড়া এলাকায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সেচ অফিসের পুরাতন ভবনের ছাদ ধসে পড়ায় তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও দুই শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন
২ ঘণ্টা আগে