বিশ্ব রাজনীতিতে ফের আলোচনায় ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’। বাইবেলের বর্ণনা থেকে উঠে আসা এই ধারণা আজও এক শ্রেণির ইসরায়েলির কাছে কেবল ধর্মীয় বিশ্বাস নয়, বরং রাজনৈতিক লক্ষ্যও। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে বলেছেন, তিনি এই স্বপ্নের সঙ্গে একাত্মবোধ করেন। প্রশ্ন হলো—‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ আসলে কী? আর নেতানিয়াহু কেনই-বা এত আগ্রহী?
তুফায়েল আহমদ
গত মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ স্বপ্নের সঙ্গে একাত্মবোধ করেন তিনি। দেশটির সাবেক সংসদ সদস্য শ্যারন গালকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুকে একটি রক্ষাবর্ম (এম্যুলেট) উপহার দেওয়া হয়। এতে ছিল ‘প্রতিশ্রুত ভূমির মানচিত্র’ তথা বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্র।
নেতানিয়াহুর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানায় আরব লীগ। এই মন্তব্যকে মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলোর ‘সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি’ বলেও অভিহিত করেন তাঁরা।
‘গ্রেটার ইসরায়েল’ বা বৃহত্তর ইসরায়েলের ধারণাটি বহুদিন ধরেই অতি-রাষ্ট্রবাদী ইসরায়েলিদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে। ইসরায়েলের ভূখণ্ড বাড়িয়ে ফিলিস্তিন, লেবানন ও জর্ডানের পাশাপাশি সিরিয়া, ইরাক, মিসর ও সৌদি আরবের বড় একটি অংশকে অন্তর্ভুক্ত করাই বৃহত্তর ইসরায়েল ধারণাটির মূল লক্ষ্য।
তবে অনেক সময় ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ বলতে ১৯৬৭ সালে দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, সিরিয়ার গোলান মালভূমি ও মিসরের সিনাই উপদ্বীপকেও বোঝানো হয়।
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণা প্রথম উত্থাপন করেন রাজনৈতিক জায়নবাদের জনক থিওডর হার্জেল। তিনি তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন, ইহুদি রাষ্ট্রের ভূখণ্ড ‘মিসরের সিনাই উপদ্বীপে অবস্থিত ওয়াদি (শুষ্ক নদীর তলদেশ) থেকে ইউফ্রেটিস পর্যন্ত’ বিস্তৃত হওয়া উচিত।
এই বর্ণনা এসেছে বাইবেলের আদিপুস্তক (জেনেসিস) থেকে। যেখানে বলা হয়েছে, ঈশ্বর ইব্রাহিম ও তাঁর বংশধরদের এক বিশাল ভূখণ্ড দান করেছেন, যা মিসরের সিনাই উপদ্বীপে অবস্থিত একটি ওয়াদি থেকে ইউফ্রেটিস পর্যন্ত বিস্তৃত।
অন্যদিকে, ওল্ড টেস্টামেন্টের দ্বিতীয় বিবরণীতে (ডিউটারোনমি) ঈশ্বর মূসাকে নির্দেশ দেন ফিলিস্তিন, লেবানন, মিসর, জর্ডান ও সিরিয়ার কিছু অংশ দখল করতে। অনেক ইসরায়েলি এটাকেই বৃহত্তর ইসরায়েল বলে মনে করেন।
আবার অনেকে বাইবেলের স্যামুয়েলের দৃষ্টান্ত টেনে আনেন। সেখানে রাজা সাউল ও দাউদের অধীনে ফিলিস্তিন, লেবানন, জর্ডান ও সিরিয়ার কিছু অংশ জয় করার বর্ণনা রয়েছে।
যারা এই বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরেন, তাদের কাছে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ শুধু রাজনৈতিক কোনো লক্ষ্য নয়, বরং এক ঐশ্বরিক নির্দেশ পূরণ। ন্যায্য ভূমি পুনরুদ্ধারের লড়াই।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেও তখন এর নির্ধারিত সীমানা ছিল না। ১৯৬৭ সালে তৃতীয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ বা ছয় দিনের যুদ্ধ শেষে গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীরের সঙ্গে সিরিয়ার গোলান মালভূমি ও মিসরের সিনাই উপদ্বীপ দখল করে ইসরায়েল।
এটি ছিল ভূখণ্ড বিস্তারে ইসরায়েলের প্রথম বড় সামরিক প্রচেষ্টা। পরে শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে সিনাই মিসরকে ফিরিয়ে দেওয়া হলেও গোলান মালভূমি ইসরায়েল একতরফাভাবে নিজেদের দখলে নেয়।
এই যুদ্ধ জায়নবাদীদের মধ্যে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণাকে নতুন করে সামনে আনে।
বিশ শতকের শেষ নাগাদ এই শব্দবন্ধ রাজনৈতিক ভাষায় পরিণত হয়, যা অনেক ইসরায়েলির কাছে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় নিয়তি বাস্তবায়নের প্রতীক হয়ে ওঠে।
ছয় দিনের যুদ্ধের পর ‘মুভমেন্ট ফর গ্রেটার ইসরায়েল’ নামে একটি রাজনৈতিক দলও গড়ে ওঠে। ১৯৭০–এর দশক পর্যন্ত সক্রিয় থাকা এই দল, দখল করা অঞ্চল ধরে রাখার ও সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপনের পক্ষে প্রচার চালায়।
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণা নিয়ে কী ভাবছে ইসরায়েল
২০২২ সালে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে উগ্র ডানপন্থী লিকুদ দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ নিয়ে আলোচনার মাত্রা বেড়েছে।
গত বছর এক প্রামাণ্যচিত্রে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচকে ইসরায়েলের সীমানা প্রসারিত করে দামেস্ক পর্যন্ত নেওয়ার পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা যায়।
বেজালেল স্মোট্রিচ বলেন, ইসরায়েল ধীরে ধীরে বড় হবে। শুধু ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নয়, বরং জর্ডান, লেবানন, মিসর, সিরিয়া, ইরাক ও সৌদি আরবের কিছু অংশও আমরা অন্তর্ভুক্ত করব। ঈশ্বর লিখে রেখেছেন, ভবিষ্যতে জেরুজালেম প্রসারিত হয়ে দামেস্ক পর্যন্ত পৌঁছাবে।
স্মোট্রিচ ২০২৩ সালে প্যারিসে এক লিকুদ কর্মীর স্মরণসভায়ও এমন মন্তব্য করেছিলেন। সেসময় তাঁর পেছনে ঝোলানো মানচিত্রে ইসরায়েলের মধ্যে জর্ডানকেও দেখানো হয়েছিল।
ইসরায়েলের বর্তমান সরকারের অনেক মন্ত্রী ও এমপিরা প্রকাশ্যে গাজা উপত্যকা দখলের পক্ষে কথা বলেছেন।
ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার সময় এক ইসরায়েলি সেনার পোশাকে ‘বৃহত্তর ইসরায়েলের’ মানচিত্র আঁকা প্যাচও দেখা গেছে।
সর্বশেষ এই সপ্তাহেই নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে আবারও তাঁর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
এই মন্তব্য এমন এক সময় এল, যখন ইসরায়েল পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, দক্ষিণ লেবানন এবং দক্ষিণ সিরিয়ার কিছু অংশ সামরিকভাবে দখল করে রেখেছে।
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণার প্রতি বেঞ্জামিন নেতনিয়াহুর সমর্থন শুধু আদর্শ ও ধর্মীয় নয়, বরং কৌশলগত। বৃহত্তর ইসরায়েল ধারণাকে ‘ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মিশন’ হিসেবে উল্লেখ করলেও নেতনিয়াহু মূলত অতিদক্ষিণপন্থীদের মন জয় করতে চাচ্ছেন। সম্প্রতি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিভক্তি কমিয়ে স্থিতিশীল সমর্থন নিশ্চিত করাটাও নেতনিয়াহুর লক্ষ্য।
অনেক বিশ্লেষক নেতনিয়াহুর অবস্থানকে পুরোনো কৌশলগত কাঠামোর প্রতিধ্বনি হিসেবে দেখছেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সুবিধা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য কৌশলগত নীতি ‘ক্লিন ব্রেক’ পরিকল্পনার রূপান্তর ঘটিয়ে ইসরায়েলি আধিপত্য নিশ্চিত করার আহ্বানের মতোই বৃহত্তর ইসরায়েল ধারণাটিকে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছেন নেতনিয়াহু।
যদিও বৃহত্তর ইসরায়েলের প্রতিশ্রুতির জন্য বিভিন্ন ভূখণ্ড দখল শীঘ্রই সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই ধারণাকে প্রতীকীভাবে সামনে আনা উগ্র-জাতীয়তাবাদী আবেগকে আরও উসকে দিচ্ছে। দুই রাষ্ট্র সমাধানকে দুর্বল করার পাশাপাশি ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সংকেতও দেয়।
তথ্যসূত্র: মিডিল ইস্ট আই, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, দ্য ন্যাশনন্স।
গত মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ স্বপ্নের সঙ্গে একাত্মবোধ করেন তিনি। দেশটির সাবেক সংসদ সদস্য শ্যারন গালকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুকে একটি রক্ষাবর্ম (এম্যুলেট) উপহার দেওয়া হয়। এতে ছিল ‘প্রতিশ্রুত ভূমির মানচিত্র’ তথা বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্র।
নেতানিয়াহুর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানায় আরব লীগ। এই মন্তব্যকে মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলোর ‘সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি’ বলেও অভিহিত করেন তাঁরা।
‘গ্রেটার ইসরায়েল’ বা বৃহত্তর ইসরায়েলের ধারণাটি বহুদিন ধরেই অতি-রাষ্ট্রবাদী ইসরায়েলিদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে। ইসরায়েলের ভূখণ্ড বাড়িয়ে ফিলিস্তিন, লেবানন ও জর্ডানের পাশাপাশি সিরিয়া, ইরাক, মিসর ও সৌদি আরবের বড় একটি অংশকে অন্তর্ভুক্ত করাই বৃহত্তর ইসরায়েল ধারণাটির মূল লক্ষ্য।
তবে অনেক সময় ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ বলতে ১৯৬৭ সালে দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, সিরিয়ার গোলান মালভূমি ও মিসরের সিনাই উপদ্বীপকেও বোঝানো হয়।
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণা প্রথম উত্থাপন করেন রাজনৈতিক জায়নবাদের জনক থিওডর হার্জেল। তিনি তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন, ইহুদি রাষ্ট্রের ভূখণ্ড ‘মিসরের সিনাই উপদ্বীপে অবস্থিত ওয়াদি (শুষ্ক নদীর তলদেশ) থেকে ইউফ্রেটিস পর্যন্ত’ বিস্তৃত হওয়া উচিত।
এই বর্ণনা এসেছে বাইবেলের আদিপুস্তক (জেনেসিস) থেকে। যেখানে বলা হয়েছে, ঈশ্বর ইব্রাহিম ও তাঁর বংশধরদের এক বিশাল ভূখণ্ড দান করেছেন, যা মিসরের সিনাই উপদ্বীপে অবস্থিত একটি ওয়াদি থেকে ইউফ্রেটিস পর্যন্ত বিস্তৃত।
অন্যদিকে, ওল্ড টেস্টামেন্টের দ্বিতীয় বিবরণীতে (ডিউটারোনমি) ঈশ্বর মূসাকে নির্দেশ দেন ফিলিস্তিন, লেবানন, মিসর, জর্ডান ও সিরিয়ার কিছু অংশ দখল করতে। অনেক ইসরায়েলি এটাকেই বৃহত্তর ইসরায়েল বলে মনে করেন।
আবার অনেকে বাইবেলের স্যামুয়েলের দৃষ্টান্ত টেনে আনেন। সেখানে রাজা সাউল ও দাউদের অধীনে ফিলিস্তিন, লেবানন, জর্ডান ও সিরিয়ার কিছু অংশ জয় করার বর্ণনা রয়েছে।
যারা এই বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরেন, তাদের কাছে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ শুধু রাজনৈতিক কোনো লক্ষ্য নয়, বরং এক ঐশ্বরিক নির্দেশ পূরণ। ন্যায্য ভূমি পুনরুদ্ধারের লড়াই।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেও তখন এর নির্ধারিত সীমানা ছিল না। ১৯৬৭ সালে তৃতীয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ বা ছয় দিনের যুদ্ধ শেষে গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীরের সঙ্গে সিরিয়ার গোলান মালভূমি ও মিসরের সিনাই উপদ্বীপ দখল করে ইসরায়েল।
এটি ছিল ভূখণ্ড বিস্তারে ইসরায়েলের প্রথম বড় সামরিক প্রচেষ্টা। পরে শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে সিনাই মিসরকে ফিরিয়ে দেওয়া হলেও গোলান মালভূমি ইসরায়েল একতরফাভাবে নিজেদের দখলে নেয়।
এই যুদ্ধ জায়নবাদীদের মধ্যে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণাকে নতুন করে সামনে আনে।
বিশ শতকের শেষ নাগাদ এই শব্দবন্ধ রাজনৈতিক ভাষায় পরিণত হয়, যা অনেক ইসরায়েলির কাছে ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় নিয়তি বাস্তবায়নের প্রতীক হয়ে ওঠে।
ছয় দিনের যুদ্ধের পর ‘মুভমেন্ট ফর গ্রেটার ইসরায়েল’ নামে একটি রাজনৈতিক দলও গড়ে ওঠে। ১৯৭০–এর দশক পর্যন্ত সক্রিয় থাকা এই দল, দখল করা অঞ্চল ধরে রাখার ও সেখানে ইহুদি বসতি স্থাপনের পক্ষে প্রচার চালায়।
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণা নিয়ে কী ভাবছে ইসরায়েল
২০২২ সালে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে উগ্র ডানপন্থী লিকুদ দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ নিয়ে আলোচনার মাত্রা বেড়েছে।
গত বছর এক প্রামাণ্যচিত্রে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচকে ইসরায়েলের সীমানা প্রসারিত করে দামেস্ক পর্যন্ত নেওয়ার পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা যায়।
বেজালেল স্মোট্রিচ বলেন, ইসরায়েল ধীরে ধীরে বড় হবে। শুধু ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নয়, বরং জর্ডান, লেবানন, মিসর, সিরিয়া, ইরাক ও সৌদি আরবের কিছু অংশও আমরা অন্তর্ভুক্ত করব। ঈশ্বর লিখে রেখেছেন, ভবিষ্যতে জেরুজালেম প্রসারিত হয়ে দামেস্ক পর্যন্ত পৌঁছাবে।
স্মোট্রিচ ২০২৩ সালে প্যারিসে এক লিকুদ কর্মীর স্মরণসভায়ও এমন মন্তব্য করেছিলেন। সেসময় তাঁর পেছনে ঝোলানো মানচিত্রে ইসরায়েলের মধ্যে জর্ডানকেও দেখানো হয়েছিল।
ইসরায়েলের বর্তমান সরকারের অনেক মন্ত্রী ও এমপিরা প্রকাশ্যে গাজা উপত্যকা দখলের পক্ষে কথা বলেছেন।
ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার সময় এক ইসরায়েলি সেনার পোশাকে ‘বৃহত্তর ইসরায়েলের’ মানচিত্র আঁকা প্যাচও দেখা গেছে।
সর্বশেষ এই সপ্তাহেই নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে আবারও তাঁর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
এই মন্তব্য এমন এক সময় এল, যখন ইসরায়েল পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, দক্ষিণ লেবানন এবং দক্ষিণ সিরিয়ার কিছু অংশ সামরিকভাবে দখল করে রেখেছে।
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণার প্রতি বেঞ্জামিন নেতনিয়াহুর সমর্থন শুধু আদর্শ ও ধর্মীয় নয়, বরং কৌশলগত। বৃহত্তর ইসরায়েল ধারণাকে ‘ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মিশন’ হিসেবে উল্লেখ করলেও নেতনিয়াহু মূলত অতিদক্ষিণপন্থীদের মন জয় করতে চাচ্ছেন। সম্প্রতি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিভক্তি কমিয়ে স্থিতিশীল সমর্থন নিশ্চিত করাটাও নেতনিয়াহুর লক্ষ্য।
অনেক বিশ্লেষক নেতনিয়াহুর অবস্থানকে পুরোনো কৌশলগত কাঠামোর প্রতিধ্বনি হিসেবে দেখছেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সুবিধা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য কৌশলগত নীতি ‘ক্লিন ব্রেক’ পরিকল্পনার রূপান্তর ঘটিয়ে ইসরায়েলি আধিপত্য নিশ্চিত করার আহ্বানের মতোই বৃহত্তর ইসরায়েল ধারণাটিকে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছেন নেতনিয়াহু।
যদিও বৃহত্তর ইসরায়েলের প্রতিশ্রুতির জন্য বিভিন্ন ভূখণ্ড দখল শীঘ্রই সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই ধারণাকে প্রতীকীভাবে সামনে আনা উগ্র-জাতীয়তাবাদী আবেগকে আরও উসকে দিচ্ছে। দুই রাষ্ট্র সমাধানকে দুর্বল করার পাশাপাশি ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সংকেতও দেয়।
তথ্যসূত্র: মিডিল ইস্ট আই, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, দ্য ন্যাশনন্স।
ক্লাইমেট চেঞ্জ, ভ্যাক্সিন, পৃথিবী গোল, মানুষ চাঁদে গেছে আরো নানা কিছু আমরা ছোটবেলা থেকে ‘বৈজ্ঞানিক সত্য’ বা হার্ড ট্রুথ হিসেবে জানি, কিন্তু কেউ কেউ তা মানে না। কেন? এরা কি শুধুই কন্সপিরেসি থিওরিস্ট? তর্ক না ভালোবাসা, কী দিয়ে এদের ‘ভালো করে দেওয়া’ যাবে? বিজ্ঞানকে না বলার বৈজ্ঞানিক কারণ কী?
১ দিন আগেসম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন। সেখানে দুই দেশের সরকার প্রধান জনশক্তি রপ্তানি, জ্বালানি সহযোগিতা, শিক্ষা, পর্যটন, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
২ দিন আগেইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে বসবে পরাশক্তি দুই দেশ। কিন্তু স্থান হিসেবে ট্রাম্প কেন আলাস্কাকেই বেছে নিলেন?
৩ দিন আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত সোমবার (১১ আগস্ট) মালয়েশিয়ায় যান। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই সফরের মূল লক্ষ্য অভিবাসন সহজ করা এবং বিনিয়োগ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন করা।
৪ দিন আগে