leadT1ad

সাক্ষাৎকার

জুলাই সনদের এখনই আইনি ভিত্তি দরকার: গাজী আতাউর রহমান

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়া। খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সনদের পটভূমি, রাজনৈতিক ঐকমত্যের ৮৪টি বিষয় এবং বাস্তবায়নের ৮টি অঙ্গীকারনামা। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে শনিবার (১৬ আগস্ট) খসড়াটি রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়। খসড়ার শব্দ, বাক্য গঠন বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনো মন্তব্য থাকলে তা ২০ আগস্ট বিকেল ৪টার মধ্যে কমিশনের কার্যালয়ে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। জুলাই সনদ নিয়ে স্ট্রিমের সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানিয়েছেন জুলাই সনদ নিয়ে নিজেদের অবস্থান। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান স্ট্রিমকে বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদে তাঁদের কয়েকটি মৌলিক দাবি বাদ পড়েছে। বাদ পড়া বিষয়গুলো নিয়ে তাঁরা জনমত তৈরির কর্মসূচী পালন করবেন। তবে একই সঙ্গে তাঁরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে এর আলোকেই নির্বাচন চান।

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। সংগৃহীত ছবি

স্ট্রিম: জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়া পাঠিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। এ ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া কী?

গাজী আতাউর রহমান: জুলাই জাতীয় সনদ ভালো বিষয়। কিন্তু কিছু মৌলিক জায়গায় ইসলামী আন্দোলন নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) দিয়েছে। এগুলোর পরিণতি কী হবে তা অনিশ্চিত। আমরা বলেছি, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি লাগবে। জুলাই সনদের আলোকে আগামী নির্বাচন হতে হবে।

স্ট্রিম: আইনি ভিত্তির আলোকেই কেন নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন?

গাজী আতাউর রহমান: কারণ, জুলাই সনদ হলো রাষ্ট্র সংস্কারের একটা সনদ। জুলাইয়ে একটা বিপ্লব হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থান যে প্রত্যাশার আলোকে হয়েছে, সেই প্রত্যাশার আলোকে এখানে জুলাই সনদ হবে। এই সরকারকেই এটা চূড়ান্ত করে এর আইনি ভিত্তি দিতে হবে। নির্বাচন-পরবর্তী যারাই ক্ষমতায় আসবে, তারা এই জুলাই সনদের আলোকেই রাষ্ট্র চালাবে। এটাই আমরা বলে আসছি।

স্ট্রিম: ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদের যে চূড়ান্ত খসড়া পাঠিয়েছে, তা নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের কোনো আপত্তি আছে?

গাজী আতাউর রহমান: খসড়ার সব বিষয়েই আমারা একমত। কিন্তু সনদের বাইরে আমাদের কিছু মৌলিক যে দাবি ছিল যেমন, নিম্নকক্ষের নির্বাচন পদ্ধতিকে ঐকমত্য কমিশন এজেন্ডায় আনেনি। এর পক্ষে-বিপক্ষে কয়টা দল রয়েছে তাও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়নি। অথচ এইটা আমরা বারবার বলে আসছি। উচ্চ কক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে, তা খসড়ায় সিদ্ধান্ত আকারে এনেছে।

স্ট্রিম: নিম্ন কক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আপনাদের দাবি প্রসঙ্গে ঐকমত্য কমিশন কী বলেছে?

গাজী আতাউর রহমান: নিম্ন কক্ষের নির্বাচন আমাদের সংকটের মূল জায়গা। খসড়ায় তারা এই নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে কিছু আনে নাই। এই আলোচনাও তারা উঠায় নাই। এটা শুধু আমাদের না, অনেকগুলো রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব ছিল যে নিম্ন কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হোক। এই বিষয়টা সনদে নাই। এটা আমাদের জন্য একটা আপত্তির জায়গা।

স্ট্রিম: আপনি বলছেন, আপনাদের মৌলিক কয়েকটি দাবি জুলাই সনদে জায়গা পায়নি। আপনারা এখন কী করবেন তাহলে?

গাজী আতাউর রহমান: পিআর পদ্ধতি নিয়ে যেন আলাদা আলোচনা হয় ও এর পক্ষে জনমত সৃষ্টি করা যায়, তা নিয়ে আমরা নানারকম কর্মসূচী দিচ্ছি। আমরা চাই, ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে জুলাই সনদ হয়েছে, সেটাও যেন কার্যকর হয়। কার্যকর না হলে কী হবে? অনেকে বলছেন এবং তারাও মনে করছে সামনের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। তখন বিএনপি যে যে জায়গায় নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সেগুলো তারা গ্রহণ করবে না। অন্য বিষয়েও তারা যেটাকে তাদের জন্য সুবিধাজনক মনে করবে, সেটা বাস্তবায়ন করবে। যেগুলোকে তারা সমস্যা মনে করবে, বাস্তবায়ন করবে না।

এই জন্য আমরা মনে করছি যে জুলাই সনদের এখনই আইনি ভিত্তি দরকার। শুধু জুলাই সনদের আলোকেই নির্বাচন হতে পারে।

স্ট্রিম: আইনি ভিত্তি কীভাবে দেওয়া যেতে পারে বলে আপনারা মনে করেন?

গাজী আতাউর রহমান: আইনি ভিত্তি হতে পারে অধ্যাদেশ জারি করে গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে। গণভোট হতে পারে। গণভোট হলে এটা আরও শক্তিশালী হয়, সংবিধানের অংশ হয়ে যায়। পরবর্তী যে সরকার আসবে, তাদের পরিবর্তন করার সুযোগ থাকবে না।

Ad 300x250

সম্পর্কিত