গত ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত বিষয় ছিল ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’। অভ্যুত্থানের পরপরই বিষয়টি করা না হলেও বছরের শেষ দিকে এসে বিষয়টি নিয়ে জোরালো হতে দেখা যায় অভ্যুত্থানের নেতাদের।
ইসলামী আন্দোলন বাংলোদেশ বলেছে, অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরি করতে হবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হতে হবে জাতীয় নির্বাচন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের পাঠ করা জুলাই ঘোষণাপত্র পরিপূর্ণ নয় বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীতে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এই ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে বলেও ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘ঘোষণাপত্র সংবিধানে স্থান দেওয়া দরকার ছিল। ৫ আগস্ট থেকে এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করবে বলে আমরা শুনেছিলাম, কিন্তু এটা কখন থেকে বাস্তবায়ন হবে তার কোনো নির্দেশিকা নেই।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আয়োজনে মঙ্গলবার পৃথক সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে দলটি। সমাবেশ থেকে জুলাই সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তের দাবি জানিয়েছে জামায়াত।
গত এক বছরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদসহ নানা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক সামিনা লুৎফার বক্তব্য শুনুন স্ট্রিম প্লে-তে।
৩৬ জুলাই উদযাপন
সকাল সাতটায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এসেছেন রেখা বেগম। সঙ্গে এনেছেন বারো বছর বয়সী ছেলে সুলাইমানকে। সুলাইমানের এক পা ভালো হলেও অন্য পায়ে ইলিজারভ ফ্রেম (ভাঙা হাড় সোজা রাখা ও জোড়া লাগাতে ব্যবহৃত যন্ত্র) লাগানো।
অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিন, ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এদিনই রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিকেল ৫টায় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি, জুলাই শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি ও আহত যোদ্ধাদের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিএনপি যেকোনো সময় ‘জুলাই সনদে’ সই করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে দুই উপদেষ্টা
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত বিষয় ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’। অভ্যুত্থানের পরপরই বিষয়টি করা না হলেও বছরের শেষ দিকে এসে বিষয়টি নিয়ে জোরালো হতে দেখা যায় অভ্যুত্থানের নেতাদের।
জুলাই সনদের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন গণ-অভ্যুত্থানে আহতরা। এতে শাহবাগ মোড় ও এর আশপাশের সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে, সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানযট।
আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদের চূড়ান্ত রূপে পৌঁছাতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। আজ মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২১তম দিনের আলোচনার শুরুতে এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ বৈঠক আয়োজিত হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া জুলাই সনদে খসড়া নিয়ে আপত্তি তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে কয়েকবার আলাপ হলেও রাজনৈতিক আদর্শিক কিছু বক্তব্য নিয়ে (রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে) এখনো ঐকমত্য নিশ্চিত হয়নি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এসব কথা লেখেন।