leadT1ad

নোয়াখালীতে পানি নামছে ধীরগতিতে

জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে গ্রামবাসী

স্ট্রিম সংবাদদাতানোয়াখালী
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৪: ৫০
নোয়াখালীতে পানি নামছে ধীরগতিতে, জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে গ্রামবাসী। স্ট্রিম ছবি

নোয়াখালীতে টানা চার দিনের পাহাড়ি ঢল ও মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পর গত দুদিন বৃষ্টি হয়নি। নোয়াখালী সদর উপজেলার, বিনোদপুর, আণ্ডারচর, কালাধরাপ, নেয়াজপুর, ৬ নম্বর নোয়াখালী ইউনিয়ন, এওয়াজবালিয়া ইউনিয়নে জেলা শহরের পানির চাপে জলাবদ্ধতা স্থায়ীরূপ নিচ্ছে বলে স্থানীয় লোকজনের দাবি।

এ ছাড়া জেলার অধিকাংশ উপজেলায় জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর, দুর্গাপুর ও লক্ষীনারায়ণপুর গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামে পানি বেড়েছে। স্থানীয় লোকজনের ধারণা, ফেনীর পানি ঢুকে বৃষ্টি না থাকলে এ অঞ্চলে পানি বেড়েছে।

আজ সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে জেলার সদর, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট, সেনবাগ এবং নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার বাসিন্দারা জানান, তাদের এলাকায় পানি নামছে ধীরগতিতে। এ জন্য বেশিরভাগ এলাকায় এখনো অতি বৃষ্টির পানি জমে থাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে গ্রামবাসী। স্ট্রিম ছবি
জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে গ্রামবাসী। স্ট্রিম ছবি

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ৬ উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। এতে ৪৬ হাজার ৭০টি পরিবারের প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫০৩ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলায় আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৫টি বসতঘর। সুবর্ণচরে একটি বসতঘর সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, পর্যাপ্ত নিষ্কাশনব্যবস্থার অভাব এবং পানিনিষ্কাশনের নালা ও জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় শহরবাসীর এ দুর্ভোগ। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকে। হালকা বৃষ্টিতেই নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এদিকে মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুর, সেন্ট্রাল রোড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বেশ কয়েকটি এলাকার সড়কের পানি নেমে গেছে। তবে এর আশপাশের অনেক বাসাবাড়িতেও পানি জমে আছে। আজ (সোমবার) সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।

নোয়াখালীতে বৃষ্টির পানি নামছে ধীরগতিতে। স্ট্রিম ছবি
নোয়াখালীতে বৃষ্টির পানি নামছে ধীরগতিতে। স্ট্রিম ছবি

জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে তেমন কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। আপাতত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও নেই। তবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে।

জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, পাঁচটি উপজেলায় ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ১ হাজার ৮৫০ জন মানুষ এবং ১৭১টি গবাদি পশু। দুর্গতদের চিকিৎসায় ৫১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৯টি কাজ শুরু করেছে। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে জেলা জামায়াতে ইসলামীসহ একাধিক রাজনৈতিক ব্যানারে জেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খননসহ পানিনিষ্কাশন পথের আবর্জনা পরিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, পানিনিষ্কাশনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত না হলে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত