leadT1ad

দেড় বছরে নতুন করে দেশে এসেছে দেড় লাখ রোহিঙ্গা

রাখাইনে সহিংসতা ও নিপীড়ন অব্যাহত থাকায় প্রায় প্রতিদিনই বাংলাদেশে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা।

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৫, ১৩: ৪৩
দেড় বছরে নতুন করে এসেছে দেড় লাখ রোহিঙ্গা । সংগৃহীত ছবি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে গত ১৮ মাসে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা। ২০১৭ সালে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর এটিই সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা। এতে কক্সবাজারের শরণার্থীশিবিরগুলোতে নতুন করে সৃষ্টি হচ্ছে বাড়তি চাপ।

গতকাল শুক্রবার (১১ জুলাই) জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এমনটা জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, রাখাইনে সহিংসতা ও নিপীড়ন অব্যাহত থাকায় প্রায় প্রতিদিনই বাংলাদেশে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। বর্তমানে কক্সবাজারের মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। নতুন করে আসা বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ফলে খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, জ্বালানিসহ সব খাতে চাপ বেড়ে চলেছে।

গতকাল সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইউএনএইচসিআরের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র বাবর বালুচ জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সহিংসতা ও দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি দেশজুড়ে চলছে সশস্ত্র সংঘাত। এসব কারণে, প্রাণ বাঁচাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা এখনো সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

ইউেনএইচসিআর জানায়, ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত নতুন করে আসা প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। তবে অনেকে এখনো অনিবন্ধিতভাবে শিবিরে অবস্থান করছেন। বায়োমেট্রিক প্রযুক্তিতে নিবন্ধনের মাধ্যমে শরণার্থীদের খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও জরুরি সহায়তা দেওয়া সহজ হলেও ভবিষ্যতে অর্থ সহায়তা না পেলে এ সেবা টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।

এ ছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্যসেবা আরও ব্যাহত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি। সেখানে রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপিজি গ্যাস শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরকম হলে নতুন করে আসা ৬৩ হাজার শিশুসহ মোট ২ লাখ ৩০ হাজার শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।

ইউেনএইচসিআর আরও জানায়, ইতিমধ্যেই সহায়তা কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে রোহিঙ্গা শিবিরে। ভবিষ্যতে আরও কিছু সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন শরণার্থীরা। ফলে অনেকেই নিরাপদ জীবন ও নিশ্চিত ভবিষ্যতের খোঁজে ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথ ব্যবহার করে অন্য দেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছে।

সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ রয়েছে। তবে সরকারের অনুমতিতে নতুন শরণার্থীরা জরুরি সহায়তা পেয়ে চলেছেন। এ জন্য ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। একই সঙ্গে, ভবিষ্যতে রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বেসামরিক শরণার্থীদের নিরাপদ আশ্রয়ের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত