leadT1ad

ডাকসু নির্বাচন

ইমি-মেঘমল্লারের নেতৃত্বে লড়বে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেল

প্রতিরোধ পর্ষদ থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে শামসুন নাহার হল ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু লড়বেন।

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক মো. জাবির আহমেদ জুবেল এই প্যানেল ঘোষণা করেন। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ নামে নতুন একটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে শামসুন নাহার হল ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু লড়বেন।

এ ছাড়া সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক মো. জাবির আহমেদ জুবেল।

আজ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ঢাবির মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. জাবির আহমেদ জুবেল এই প্যানেল ঘোষণা করেন।

প্যানেলটি গঠিত হয়েছে—বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র কাউন্সিল, ছাত্র যুব আন্দোলন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলে ১২ জন নারী, তিনজন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

প্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে মোজাম্মেল হক, কমনরুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে নূজিয়া হাসিন, মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক পদে আকাশ আলী, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক পদে লিটন ত্রিপুরা, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে নিনাদ খান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে নাঈম উদ্দীন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ফারিয়া মতিন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে মালিহা তাবাসসুম, সমাজসেবা সম্পাদক পদে আবু মুজাহিদ আকাশ, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে শেখ তাসনিভা সৃষ্টি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ফাতিন ইশরাক এবং গবেষণা ও প্রকাশনা পদে আলমগীর হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া মো. তাফসিরুল্লাহ, রাজেকুজ্জামান জুয়েল, ওয়াকার রহমান সৌরভ, মোহাম্মদ মুস্তাকিম, মিশকাতুল মাশিয়াত, আতিকা আনজুম, পৃথিং মারমা, ইসরাত জাহান ইমু, আনিয়া ফাহমিন, রাহনুমা আহমেদ, সাজিদ উল ইসলাম ও হেমা চাকমাকে সদস্যপদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভিপিপ্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের শুরুতেই পক্ষপাতমূলক আচরণের নিন্দা জানাচ্ছি। ছাত্রদলের সঙ্গে ‘মব’ সৃষ্টি করে যে আচরণ করা হয়েছে, সেটিরও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে প্রতিরোধের পরিচিত মুখের ব্যক্তিরাই আমাদের প্যানেলে প্রার্থী হয়েছেন।’

তিনি আশা করছেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের পাশে থাকবেন।

জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘বিভিন্ন রকম পর্ষদ, বিভিন্ন রকম প্যানেল আপনারা গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে পাচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই প্যানেলগুলি কোনো একক সংগঠনের মদদপুষ্ট বা একক সংগঠনের নেতৃত্বে তৈরি হয়। যার ফলে তাদের জন্য একটা একক প্যানেল ঘোষণা করা অপেক্ষাকৃত সহজতর। কিন্তু আমাদের যে প্যানেল, এই প্যানেলের নাম এপ্রোপিয়েট অর্থেই আমরা প্রতিরোধী পর্ষদ রেখেছি। কিন্তু আমরা দেখছি, এটা মিডিয়াতে প্রচারের সময় অনেকেই গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের বা বামপন্থীদের প্যানেল বলে প্রচার করছেন।’

মেঘমল্লার বলেন, ‘আমরা আশা করবো, আপনারা এই মিডিয়া ফ্রেমিং থেকে বের হয়ে আসবেন। তার কারণ আপনাদের সামনে যে নামগুলি উচ্চারিত হলো, আপনারা যদি এই নামগুলো বিশ্লেষণ করেন, তাহলে দেখবেন এর প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি মানুষ কোনো ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। বরং তাঁরা নিজ নিজ জায়গা থেকে নিজের প্রতিরোধ জারি রেখেছেন।’

প্যানেলের নারী উপস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত, আপ্লুত যে আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন পরিচয়ের বিভিন্ন আইডেন্টিটির মানুষ, তাদের নিয়ে সমন্বিতভাবে এই প্যানেলটি নির্মাণ করতে পেরেছি। এখানে যে নারী উপস্থিতি আপনারা দেখছেন, সেই নারী উপস্থিতি কোনো টোকেনেস্টিক নারী উপস্থিতি নয়। আমরা আন্দোলনে সংগ্রামে নারী এবং পুরুষকে ইকুয়াল স্টেকহোল্ডার মনে করি দেখেই এই নারীদেরকে আমাদের পর্ষদে পেয়েছি। তাঁরা কেউ কারো টোকেনের অংশ হিসেবে এই পর্ষদের অংশ হননি।’

প্রতিরোধ পর্ষদের আদিবাসীরে উপস্থিতি নিয়ে মেঘমল্লার বলেন, ‘এখন নির্বাচনের সময়, সাধরণত যারা আদিবাসীদের উপজাতি বলে পরিহাস করে তাদেরও চারটা ভোট টানার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হচ্ছে। যাদের যাদের পর্ষদ বা প্যানেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আসা নৃগোষ্ঠীগুলো প্রতিনিধি রয়েছে, আপনারা তাদের স্পষ্ট করে জিজ্ঞেস করবেন, তাঁরা তাঁদের প্যানেলে উপজাতি হিসেবে আছেন নাকি আদিবাসী হিসেবে আছেন। আমাদের প্যানেলে কোনো উপজাতি নাই। আমাদের তিনজন আদিবাসী প্রতিনিধি আছেন।’

‘মুদ্দা কথা, এইখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আদিবাসী-বাঙালি নির্বিশেষে আমরা এমন একটি পর্ষদ গঠন করেছি, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈচিত্র্যকে ধারণ করে। এবং যা আমাদের গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের সমন্বিত ফোর্সের অংশ হবে।’–যোগ করেন তিনি।

মেঘমল্লার বলেন, ‘একাত্তোরের গণহত্যাকারী শক্তি, চব্বিশের গণহত্যাকারী শক্তি— তাদের বিরুদ্ধে আমরা যুগপৎ গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলবো। সেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি পাথেয় হয়ে থাকবে এই ডাকসু নির্বাচন। আশা করি, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেল ব্যাপকভাবে জয়লাভ করবে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত