leadT1ad

সিলেটে উপজেলা কৃষক দল সভাপতি গ্রেপ্তার, উদ্ধার পাথর ফেলা হচ্ছে নদীতে

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সাদা পাথর লুটপাটের অভিযোগ ছিল ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলমের বিরুদ্ধে। সেই সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁর নৌকা আটকে তাঁকে সতর্ক করেছিলেন।

স্ট্রিম সংবাদদাতাসিলেট
গ্রেপ্তার কৃষক দল নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের বালু ও পাথর চুরির মামলায় আলমগীর আলম নামে এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের খাঁয়েরগাওয়ের নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পূর্ব ইসলামপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করেছে প্রশাসন। এই পাথর নদীতে ফেলা হবে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথর থেকে অবৈধভাবে পাথর লুট ও পাচারের বিরুদ্ধে বুধবার রাত থেকে অভিযান শুরু হয়। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত এ সব পাথর উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

কৃষক দলের সভাপতি গ্রেপ্তার

বালু ও পাথর চুরির মামলায় জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী ইসলামপুর (পূর্ব) ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আলমগীর আলমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, আলমগীর আলমের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে বালু ও পাথর চুরির অভিযোগে করা একটি মামলার ওয়ারেন্ট ছিল। সেই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এ ছাড়া গত বছরের ৫ আগস্টের পর সাদা-পাথর লুটপাটের অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা আলমগীরের নৌকা আটকে তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক সুজন চন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘আলমগীর আলম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আগের একটি মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে ডিবি। আমরা তাঁকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করব।’

প্রশাসনের ৫ সিদ্ধান্ত

সাদাপাথর থেকে লুটের পর উদ্ধার হওয়া পাথর পুনঃস্থাপন ও লুটপাট ঠেকাতে ৫ দফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সিলেট সার্কিট হাউজে সর্বস্তরের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সম্মিলিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। রাতেই বাংলা স্ট্রিমকে নিশ্চিত করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।

প্রশাসনের সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে আছে জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে, সেই সঙ্গে গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে তারা। এ ছাড়া অবৈধ ক্রাশিং মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ বন্ধে অভিযান চলমান থাকবে। তা ছাড়া পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতেই জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কালাইরাগ নামক এলাকায় প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করে পুনঃস্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি পাথর যেন কেউ সিলেটের বাইরে নিয়ে যেতে না পারে, এ জন্য চেকপোস্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে বৃহস্পতিবার হাওর ও নদীরক্ষা আন্দোলনের মানববন্ধন। স্ট্রিম ছবি
সুনামগঞ্জ শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে বৃহস্পতিবার হাওর ও নদীরক্ষা আন্দোলনের মানববন্ধন। স্ট্রিম ছবি

সুনামগঞ্জে প্রতিবাদ

এদিকে সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা-পাথর পর্যটনকেন্দ্রের পাথর লুটপাটের ঘটনায় প্রশাসনকে দায় নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশবাদী সংগঠন হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন-এর নেতারা। ওই ঘটনার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে গণসমাবেশ ও মানববন্ধন করে সংগঠনটি। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে সুনামগঞ্জ শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে মানববন্ধনে সংগঠনের নেতা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।

হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ওবায়দুল হক মিলনের সভাপতিত্বে মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু আহমেদের।

Ad 300x250

সম্পর্কিত