মারিয়ানা ট্রেঞ্চ থেকে শুরু করে মাউন্ট এভারেস্ট—প্লাস্টিক দূষণ পৌঁছে গেছে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম অঞ্চলে। বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৪৬০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন করা হয়।
হুমায়ূন শফিক
গত ৫ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জেনেভাতে অনুষ্ঠিত হলো গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তির ৬ষ্ঠ বৈঠক। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে এই সম্মেলন। অথচ মারিয়ানা ট্রেঞ্চ থেকে শুরু করে মাউন্ট এভারেস্ট—প্লাস্টিক দূষণ পৌঁছে গেছে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম অঞ্চলে।
বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৪৬০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন করা হয়। এর মধ্যে রিসাইকেল করা হয় মাত্র ৯%। বাকি প্রায় ৯০% প্লাস্টিক আমাদের পৃথিবীকে দূষিত করে। সারা বিশ্বে ৯ মিলিয়ন থেকে ১৪ মিলিয়ন প্লাস্টিক সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। প্লাস্টিক দূষণের ফলে দূষিত হচ্ছে বনাঞ্চল ও পরিবেশ । এই দূষণ লাখো মানুষের জীবনকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে, প্রভাব ফেলছে মানবজাতি ও বিশ্ব-অর্থনীতির ওপর।
গবেষকদের মতে, এই গতিতে চলতে থাকলে, ২০৪০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক প্লাস্টিক দূষণ তিনগুণ হতে পারে। স্বেচ্ছাসেবক উদ্যোগ ও দেশভিত্তিক প্রচেষ্টা প্রমাণ করেছে যে এগুলো প্লাস্টিকের দূষণ ও বিষক্রিয়া ঠেকাতে কার্যকর নয়, বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে এই সমস্যার মোকাবিলায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতীয় ও স্বেচ্ছাসেবী পদক্ষেপের সংখ্যা ৬০% বেড়েছে। তবুও প্লাস্টিক দূষণ ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টন প্লাস্টিক সমুদ্রে প্রবেশ করছে। প্লাস্টিকের প্রবাহ বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। এ বিষয়ে একটি সমাধান খুবই জরুরি।
গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তি কী?
প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করতে বিশ্বজুড়ে দেশগুলো মিলে একটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তি প্রণয়ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এটিই হলো গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তি। ২০২২ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ পরিবেশ সমাবেশ (ইউএনইএ-৫.২)-এর শেষে, বিশ্বের ১৭৫টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, পরিবেশমন্ত্রী এবং অন্যান্য প্রতিনিধিরা একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে উপনীত হন—প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে একটি আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যতামূলক চুক্তি প্রণয়নের জন্য ম্যান্ডেট গৃহীত হয় সেখানে।
এই ঐকমত্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি ইন্টারগভর্মেন্টাল নেগোশিয়েটিং কমিটি (আইএনসি) গঠনের সিদ্ধান্ত। যার কাজ হবে একটি জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তি প্রস্তুত করা। এই চুক্তি হবে আইনিভাবে বাধ্যতামূলক। এটি প্লাস্টিকের পূর্ণ জীবনচক্রজুড়ে প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলা করবে। ধারণা করা হচ্ছে, এই জীবনচক্রের পরিধি হবে কাঁচামাল উত্তোলন থেকে শুরু করে ব্যবহার শেষে নিষ্পত্তি পর্যন্ত।
এই চুক্তির পক্ষে ছিল এক হাজারের বেশি সিভিল সোসাইটি সংগঠন, কয়েকশ বিজ্ঞানী, লাখো সাধারণ মানুষ ও অনেক সরকারি প্রতিনিধি -- যারা ইউএনইএ-৫.২ সম্মেলনের আগেই এই চুক্তির জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
চূড়ান্তভাবে, ২০২৪ সালের মধ্যে এই চুক্তি প্রণয়ন সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সম্মেলনগুলোতে কী ঘটেছিল
প্রথম বৈঠক: ডিসেম্বর ২০২২। উরুগুয়ের পুন্তা দেল এস্তে শহরে অনুষ্ঠিত হয় জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির প্রথম আলোচনা সভা (আইএনসি-১)। এখানে বৈঠকে বসেন সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। ভবিষ্যতের আলোচনার কাঠামো ও অগ্রাধিকার নির্ধারণের প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা।
এই বৈঠকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে বিশ্বব্যাপী একটি প্লাস্টিক চুক্তির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ব্যাপক ঐকমত্য থাকলেও চুক্তির প্রকৃতি ও পরিধি কেমন হবে তা নিয়ে দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও কিছু এশীয় দেশসহ প্রধান তেল ও গ্যাস-উৎপাদনকারী রাষ্ট্রগুলো প্রস্তাব করে—প্রতিটি দেশের জন্য আলাদা ‘ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান’ (জাতীয় কর্মপরিকল্পনা) তৈরি হোক। যেখানে দেশগুলো নিজেরা অবাধ ও বাধ্যতামূলক নয় এমন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে।
নরওয়ে ও রুয়ান্ডার নেতৃত্বে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী জোট চায়—প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাস, নির্দিষ্ট প্লাস্টিক পণ্য এবং বিষাক্ত রাসায়নিক যুক্ত উপাদান ধাপে ধাপে নিষিদ্ধ করা হোক। তাদের দাবি, প্লাস্টিক দূষণ রোধ করতে হলে কেবল ব্যবস্থাপনা নয়, উৎপাদনের দিকেই নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে।
দ্বিতীয় বৈঠক: মে ও জুন ২০২৩। ফ্রান্সের প্যারিস শহরে অনুষ্ঠিত হয় জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির দ্বিতীয় আলোচনা সভা (আইএনসি-২)। বৈঠকটি অনেক প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হলেও একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় আলোচনাপ্রক্রিয়া। শেষ মুহূর্তে অংশগ্রহণে সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। ফলে অনেক সিভিল সোসাইটির সংগঠন, বিশেষ করে সম্মুখসারির ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বৈঠকে পুরোপুরি অংশ নিতে পারেনি।
তৃতীয় বৈঠক: নভেম্বর ২০২৩। জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির তৃতীয় দফা আলোচনা (আইএনসি-৩) কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত হয়। আইএনসি-৩ থেকে কিছু আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি এসেছে। বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়েছেন যে প্লাস্টিক, পেট্রোকেমিক্যাল ও জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পের উপস্থিতি ও প্রভাব—বড় একটি উদ্বেগের বিষয়। কিছু দেশ বৈশ্বিক নয়, বরং জাতীয় পর্যায়ে বাধ্যতামূলক চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও প্লাস্টিক উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে বৈশ্বিক বাধ্যতামূলক নিয়মই প্রয়োজন।
চতুর্থ বৈঠক: এপ্রিল ২০২৪। জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির চতুর্থ দফা আলোচনা (আইএনসি-৪) কানাডার অটোয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে মানবস্বাস্থ্য ও পৃথিবীর ওপর প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে স্বীকৃতি আগের তুলনায় আরও বৃদ্ধি পায়। আদিবাসী সম্প্রদায়গুলোকে এই অধিবেশনে পূর্ণ ও সমান অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত করা হয়। তবুও, কিছু দেশ উৎস পর্যায়ে প্লাস্টিক উৎপাদন সীমিত করা এবং প্লাস্টিকের পুরো জীবনচক্র জুড়ে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার নির্মূল করার মতো উচ্চাভিলাষী অবস্থান নিয়েছিল।
পঞ্চম বৈঠক: ২০২৪ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির পঞ্চম দফা আলোচনা (আইএনসি-৫) দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে অনুষ্ঠিত হয়। এটিকে নির্ধারণ করা হয়েছিল চূড়ান্ত অধিবেশন হিসেবে। ১ ডিসেম্বরের শেষ দিন পর্যন্ত ১৭০টিরও বেশি দেশের আলোচকেরা অচলাবস্থায় আটকে থাকেন। প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাসের পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। আইএনসি-৫ চলাকালে উচ্চাভিলাষী দেশসমূহ ও পর্যবেক্ষকরা জোর দিয়ে বলেন যে এখনই দুর্বল চুক্তি মেনে নেওয়ার চেয়ে একটি শক্তিশালী চুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া অনেক বেশি মূল্যবান।
আগের চার অধিবেশনের মতোই আইএনসি-৫-এর অগ্রগতি জীবাশ্ম জ্বালানি ও প্লাস্টিক শিল্পের প্রভাব দ্বারা ব্যাহত হয়। ১০০টিরও বেশি দেশ পানামার প্রস্তাব—প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাস—সমর্থন করেছে; ৯৫টি দেশ ক্ষতিকর রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণে আইনত বাধ্যতামূলক লক্ষ্যমাত্রার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ১২০টিরও বেশি দেশ শক্তিশালী বাস্তবায়নমূলক ব্যবস্থা-সংবলিত একটি চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়াও, এই অধিবেশন একটি রেকর্ড সৃষ্টি করে—মোট ৩,৩০০ জন প্রতিনিধি (সরকারি ও পর্যবেক্ষক) এতে অংশ নেয়—যা বৈশ্বিক অঙ্গনে এই চুক্তির ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।
কেন ব্যর্থ হলো জেনেভার সম্মেলন
গত ৫ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জেনেভাতে অনুষ্ঠিত হলো গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তির ৬ষ্ঠ বৈঠক (আইএনসি-৬)।
প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলার জন্য একটি ঐতিহাসিক চুক্তি গড়ে তুলতে বৈশ্বিক আলোচনা আবারও ব্যর্থ হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত সমঝোতার চেষ্টা সত্ত্বেও কোনো সমাধান আসেনি।
সমাপনী বৈঠকে প্রতিনিধি দলগুলো তাদের হতাশা প্রকাশ করে বলেন, তিন বছরের কম সময়ে ছয় দফা আলোচনার পরও দেশগুলোর মধ্যে চুক্তির পরিধি নিয়ে গভীর বিভাজন রয়ে গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিরা হতাশ। কারণ এই অধিবেশনে বাধ্যতামূলক চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। দেশগুলোর অবস্থান এখনও আগের মতই আছে। নিজ নিজ স্বার্থের বাইরে কেউ অন্য কিছু ভাবছে না।
কিউবার প্রতিনিধি বলেন, আলোচকেরা একটি ঐতিহাসিক সুযোগ হারিয়েছেন। কিন্তু আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
কমপক্ষে ১৮০টি দেশের এক হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি জেনেভা শহরে একত্রিত হয়েছিলেন আইএনসি’র সর্বশেষ বৈঠকে। জাতিসংঘ পরিবেশ পরিষদ (ইউএনইএ) ২০২২ সালে এই কমিটি গঠন করে। যার লক্ষ্য হলো প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বিশ্বের প্রথম আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক চুক্তি প্রণয়ন।
জেনেভায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনাকে চূড়ান্ত পর্ব হিসেবে দেখা হচ্ছিল—যেখানে একটি চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তবে একই প্রত্যাশা গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে অনুষ্ঠিত আলোচনার ক্ষেত্রেও করা হয়েছিল।
প্রতিনিধিরা একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর এবং আপসের পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আলোচনা ভেঙে পড়ে।
ফ্রান্সের পরিবেশগত রূপান্তর বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাগনেস পানিয়ে-রুনাশে জেনেভার ফলাফলে ‘ক্ষুব্ধ’ ও ‘হতাশ’ হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন। তিনি যোগ করেন, স্বল্পসংখ্যক দেশ ‘স্বল্পমেয়াদি আর্থিক স্বার্থে পরিচালিত হয়ে’ একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৩৯টি ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কথা বলতে গিয়ে পালাউ হতাশা প্রকাশ করে বলেছে, জনগণকে দেখানোর মতো যথেষ্ট অগ্রগতি ছাড়াই আমরা বারবার ঘরে ফিরে যাই। পালাউ আরও বলেছে, আমাদের দেশগুলোর জন্য এটি অন্যায্য যে আমরা এমন এক বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের মূল আঘাত বহন করছি, যেখানে আমাদের অবদান ন্যূনতম।
পরবর্তী আলোচনার ধাপগুলো তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হয়নি। প্রতিনিধি দলগুলো পুনরায় একত্রিত হলে মধ্যস্থতাকারী পর্ষদের প্রধান লুইস ভায়াস ভ্লাদিভিয়েসো বলেন, সর্বশেষ খসড়ার ওপর কোনো নতুন পদক্ষেপ এখনো প্রস্তাব করা হয়নি। তিনি পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতলের ঢাকনা দিয়ে তৈরি একটি হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে ঘোষণা করেন যে অধিবেশন মুলতবি করা হলো, পরবর্তী তারিখে পুনরায় শুরু হবে।
কয়েকজন প্রতিনিধি ফলাফলে হতাশ হলেও ভবিষ্যতে সপ্তম দফা আলোচনার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, সর্বশেষ খসড়াটি ভবিষ্যৎ আলোচনার জন্য একটি ভালো ভিত্তি, আর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘এখানেই শেষ হতে পারে না।’
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা, গ্লোবালপ্লাস্টিকলস ডট কম, ইউএনইপি ডট ওআরজি, সিএনএন, বিবিসি, ওয়ার্ল্ডওয়াইল্ডলাইফ
গত ৫ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জেনেভাতে অনুষ্ঠিত হলো গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তির ৬ষ্ঠ বৈঠক। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে এই সম্মেলন। অথচ মারিয়ানা ট্রেঞ্চ থেকে শুরু করে মাউন্ট এভারেস্ট—প্লাস্টিক দূষণ পৌঁছে গেছে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম অঞ্চলে।
বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৪৬০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন করা হয়। এর মধ্যে রিসাইকেল করা হয় মাত্র ৯%। বাকি প্রায় ৯০% প্লাস্টিক আমাদের পৃথিবীকে দূষিত করে। সারা বিশ্বে ৯ মিলিয়ন থেকে ১৪ মিলিয়ন প্লাস্টিক সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। প্লাস্টিক দূষণের ফলে দূষিত হচ্ছে বনাঞ্চল ও পরিবেশ । এই দূষণ লাখো মানুষের জীবনকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে, প্রভাব ফেলছে মানবজাতি ও বিশ্ব-অর্থনীতির ওপর।
গবেষকদের মতে, এই গতিতে চলতে থাকলে, ২০৪০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক প্লাস্টিক দূষণ তিনগুণ হতে পারে। স্বেচ্ছাসেবক উদ্যোগ ও দেশভিত্তিক প্রচেষ্টা প্রমাণ করেছে যে এগুলো প্লাস্টিকের দূষণ ও বিষক্রিয়া ঠেকাতে কার্যকর নয়, বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে এই সমস্যার মোকাবিলায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতীয় ও স্বেচ্ছাসেবী পদক্ষেপের সংখ্যা ৬০% বেড়েছে। তবুও প্লাস্টিক দূষণ ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টন প্লাস্টিক সমুদ্রে প্রবেশ করছে। প্লাস্টিকের প্রবাহ বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। এ বিষয়ে একটি সমাধান খুবই জরুরি।
গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তি কী?
প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করতে বিশ্বজুড়ে দেশগুলো মিলে একটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তি প্রণয়ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এটিই হলো গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তি। ২০২২ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ পরিবেশ সমাবেশ (ইউএনইএ-৫.২)-এর শেষে, বিশ্বের ১৭৫টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, পরিবেশমন্ত্রী এবং অন্যান্য প্রতিনিধিরা একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে উপনীত হন—প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে একটি আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যতামূলক চুক্তি প্রণয়নের জন্য ম্যান্ডেট গৃহীত হয় সেখানে।
এই ঐকমত্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি ইন্টারগভর্মেন্টাল নেগোশিয়েটিং কমিটি (আইএনসি) গঠনের সিদ্ধান্ত। যার কাজ হবে একটি জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তি প্রস্তুত করা। এই চুক্তি হবে আইনিভাবে বাধ্যতামূলক। এটি প্লাস্টিকের পূর্ণ জীবনচক্রজুড়ে প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলা করবে। ধারণা করা হচ্ছে, এই জীবনচক্রের পরিধি হবে কাঁচামাল উত্তোলন থেকে শুরু করে ব্যবহার শেষে নিষ্পত্তি পর্যন্ত।
এই চুক্তির পক্ষে ছিল এক হাজারের বেশি সিভিল সোসাইটি সংগঠন, কয়েকশ বিজ্ঞানী, লাখো সাধারণ মানুষ ও অনেক সরকারি প্রতিনিধি -- যারা ইউএনইএ-৫.২ সম্মেলনের আগেই এই চুক্তির জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
চূড়ান্তভাবে, ২০২৪ সালের মধ্যে এই চুক্তি প্রণয়ন সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সম্মেলনগুলোতে কী ঘটেছিল
প্রথম বৈঠক: ডিসেম্বর ২০২২। উরুগুয়ের পুন্তা দেল এস্তে শহরে অনুষ্ঠিত হয় জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির প্রথম আলোচনা সভা (আইএনসি-১)। এখানে বৈঠকে বসেন সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। ভবিষ্যতের আলোচনার কাঠামো ও অগ্রাধিকার নির্ধারণের প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা।
এই বৈঠকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে বিশ্বব্যাপী একটি প্লাস্টিক চুক্তির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ব্যাপক ঐকমত্য থাকলেও চুক্তির প্রকৃতি ও পরিধি কেমন হবে তা নিয়ে দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও কিছু এশীয় দেশসহ প্রধান তেল ও গ্যাস-উৎপাদনকারী রাষ্ট্রগুলো প্রস্তাব করে—প্রতিটি দেশের জন্য আলাদা ‘ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান’ (জাতীয় কর্মপরিকল্পনা) তৈরি হোক। যেখানে দেশগুলো নিজেরা অবাধ ও বাধ্যতামূলক নয় এমন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে।
নরওয়ে ও রুয়ান্ডার নেতৃত্বে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী জোট চায়—প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাস, নির্দিষ্ট প্লাস্টিক পণ্য এবং বিষাক্ত রাসায়নিক যুক্ত উপাদান ধাপে ধাপে নিষিদ্ধ করা হোক। তাদের দাবি, প্লাস্টিক দূষণ রোধ করতে হলে কেবল ব্যবস্থাপনা নয়, উৎপাদনের দিকেই নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে।
দ্বিতীয় বৈঠক: মে ও জুন ২০২৩। ফ্রান্সের প্যারিস শহরে অনুষ্ঠিত হয় জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির দ্বিতীয় আলোচনা সভা (আইএনসি-২)। বৈঠকটি অনেক প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হলেও একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় আলোচনাপ্রক্রিয়া। শেষ মুহূর্তে অংশগ্রহণে সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। ফলে অনেক সিভিল সোসাইটির সংগঠন, বিশেষ করে সম্মুখসারির ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বৈঠকে পুরোপুরি অংশ নিতে পারেনি।
তৃতীয় বৈঠক: নভেম্বর ২০২৩। জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির তৃতীয় দফা আলোচনা (আইএনসি-৩) কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত হয়। আইএনসি-৩ থেকে কিছু আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি এসেছে। বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়েছেন যে প্লাস্টিক, পেট্রোকেমিক্যাল ও জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পের উপস্থিতি ও প্রভাব—বড় একটি উদ্বেগের বিষয়। কিছু দেশ বৈশ্বিক নয়, বরং জাতীয় পর্যায়ে বাধ্যতামূলক চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও প্লাস্টিক উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে বৈশ্বিক বাধ্যতামূলক নিয়মই প্রয়োজন।
চতুর্থ বৈঠক: এপ্রিল ২০২৪। জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির চতুর্থ দফা আলোচনা (আইএনসি-৪) কানাডার অটোয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে মানবস্বাস্থ্য ও পৃথিবীর ওপর প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে স্বীকৃতি আগের তুলনায় আরও বৃদ্ধি পায়। আদিবাসী সম্প্রদায়গুলোকে এই অধিবেশনে পূর্ণ ও সমান অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত করা হয়। তবুও, কিছু দেশ উৎস পর্যায়ে প্লাস্টিক উৎপাদন সীমিত করা এবং প্লাস্টিকের পুরো জীবনচক্র জুড়ে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার নির্মূল করার মতো উচ্চাভিলাষী অবস্থান নিয়েছিল।
পঞ্চম বৈঠক: ২০২৪ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে জাতিসংঘ প্লাস্টিক চুক্তির পঞ্চম দফা আলোচনা (আইএনসি-৫) দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে অনুষ্ঠিত হয়। এটিকে নির্ধারণ করা হয়েছিল চূড়ান্ত অধিবেশন হিসেবে। ১ ডিসেম্বরের শেষ দিন পর্যন্ত ১৭০টিরও বেশি দেশের আলোচকেরা অচলাবস্থায় আটকে থাকেন। প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাসের পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। আইএনসি-৫ চলাকালে উচ্চাভিলাষী দেশসমূহ ও পর্যবেক্ষকরা জোর দিয়ে বলেন যে এখনই দুর্বল চুক্তি মেনে নেওয়ার চেয়ে একটি শক্তিশালী চুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া অনেক বেশি মূল্যবান।
আগের চার অধিবেশনের মতোই আইএনসি-৫-এর অগ্রগতি জীবাশ্ম জ্বালানি ও প্লাস্টিক শিল্পের প্রভাব দ্বারা ব্যাহত হয়। ১০০টিরও বেশি দেশ পানামার প্রস্তাব—প্লাস্টিক উৎপাদন হ্রাস—সমর্থন করেছে; ৯৫টি দেশ ক্ষতিকর রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণে আইনত বাধ্যতামূলক লক্ষ্যমাত্রার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ১২০টিরও বেশি দেশ শক্তিশালী বাস্তবায়নমূলক ব্যবস্থা-সংবলিত একটি চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়াও, এই অধিবেশন একটি রেকর্ড সৃষ্টি করে—মোট ৩,৩০০ জন প্রতিনিধি (সরকারি ও পর্যবেক্ষক) এতে অংশ নেয়—যা বৈশ্বিক অঙ্গনে এই চুক্তির ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।
কেন ব্যর্থ হলো জেনেভার সম্মেলন
গত ৫ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জেনেভাতে অনুষ্ঠিত হলো গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তির ৬ষ্ঠ বৈঠক (আইএনসি-৬)।
প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলার জন্য একটি ঐতিহাসিক চুক্তি গড়ে তুলতে বৈশ্বিক আলোচনা আবারও ব্যর্থ হয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত সমঝোতার চেষ্টা সত্ত্বেও কোনো সমাধান আসেনি।
সমাপনী বৈঠকে প্রতিনিধি দলগুলো তাদের হতাশা প্রকাশ করে বলেন, তিন বছরের কম সময়ে ছয় দফা আলোচনার পরও দেশগুলোর মধ্যে চুক্তির পরিধি নিয়ে গভীর বিভাজন রয়ে গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিরা হতাশ। কারণ এই অধিবেশনে বাধ্যতামূলক চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। দেশগুলোর অবস্থান এখনও আগের মতই আছে। নিজ নিজ স্বার্থের বাইরে কেউ অন্য কিছু ভাবছে না।
কিউবার প্রতিনিধি বলেন, আলোচকেরা একটি ঐতিহাসিক সুযোগ হারিয়েছেন। কিন্তু আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
কমপক্ষে ১৮০টি দেশের এক হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি জেনেভা শহরে একত্রিত হয়েছিলেন আইএনসি’র সর্বশেষ বৈঠকে। জাতিসংঘ পরিবেশ পরিষদ (ইউএনইএ) ২০২২ সালে এই কমিটি গঠন করে। যার লক্ষ্য হলো প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বিশ্বের প্রথম আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক চুক্তি প্রণয়ন।
জেনেভায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনাকে চূড়ান্ত পর্ব হিসেবে দেখা হচ্ছিল—যেখানে একটি চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তবে একই প্রত্যাশা গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে অনুষ্ঠিত আলোচনার ক্ষেত্রেও করা হয়েছিল।
প্রতিনিধিরা একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর এবং আপসের পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আলোচনা ভেঙে পড়ে।
ফ্রান্সের পরিবেশগত রূপান্তর বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাগনেস পানিয়ে-রুনাশে জেনেভার ফলাফলে ‘ক্ষুব্ধ’ ও ‘হতাশ’ হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন। তিনি যোগ করেন, স্বল্পসংখ্যক দেশ ‘স্বল্পমেয়াদি আর্থিক স্বার্থে পরিচালিত হয়ে’ একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৩৯টি ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কথা বলতে গিয়ে পালাউ হতাশা প্রকাশ করে বলেছে, জনগণকে দেখানোর মতো যথেষ্ট অগ্রগতি ছাড়াই আমরা বারবার ঘরে ফিরে যাই। পালাউ আরও বলেছে, আমাদের দেশগুলোর জন্য এটি অন্যায্য যে আমরা এমন এক বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের মূল আঘাত বহন করছি, যেখানে আমাদের অবদান ন্যূনতম।
পরবর্তী আলোচনার ধাপগুলো তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হয়নি। প্রতিনিধি দলগুলো পুনরায় একত্রিত হলে মধ্যস্থতাকারী পর্ষদের প্রধান লুইস ভায়াস ভ্লাদিভিয়েসো বলেন, সর্বশেষ খসড়ার ওপর কোনো নতুন পদক্ষেপ এখনো প্রস্তাব করা হয়নি। তিনি পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতলের ঢাকনা দিয়ে তৈরি একটি হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে ঘোষণা করেন যে অধিবেশন মুলতবি করা হলো, পরবর্তী তারিখে পুনরায় শুরু হবে।
কয়েকজন প্রতিনিধি ফলাফলে হতাশ হলেও ভবিষ্যতে সপ্তম দফা আলোচনার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, সর্বশেষ খসড়াটি ভবিষ্যৎ আলোচনার জন্য একটি ভালো ভিত্তি, আর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘এখানেই শেষ হতে পারে না।’
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা, গ্লোবালপ্লাস্টিকলস ডট কম, ইউএনইপি ডট ওআরজি, সিএনএন, বিবিসি, ওয়ার্ল্ডওয়াইল্ডলাইফ
সম্প্রতি বিনা অনুমতিতে রাষ্ট্রের ‘সংবেদনশীল’ তথ্য প্রকাশের অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবল অমি দাশকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজের ওয়াকিটকি বক্তব্য প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
১৩ ঘণ্টা আগেসাম্প্রতিক প্রবণতায় এর উত্তর পাওয়া যাবে। তালেবানের সঙ্গে গোপন আলোচনা থেকে শুরু করে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আড়ালে চলা সমঝোতা—সব জায়গাতেই এই ছোট্ট উপসাগরীয় দেশটি বিশ্বে মধ্যস্থতার অন্যতম নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হয়ে উঠছে। এর পেছনে রয়েছে তাদের বিপুল অর্থনৈতিক সামর্থ্য ও কৌশলগত অস্পষ্ট অবস্থান।
১ দিন আগেপৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক অবস্থা গঠনের সময় ইন্ডিয়ান প্লেটের সঙ্গে ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষ হয়। কয়েক কোটি বছর আগের ওই ঘটনায় বর্তমান হিমালয় পর্বতশ্রেণির সৃষ্টি। ওই সময়ই সিলেটের জাফলংয়ের ডাউকি নদীর পূর্ব তীরে বিশাল আকারের পাথররাজি মাটির ওপরে উঠে আসে।
২ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি চিঠি লিখেছেন। গত ১৫ আগস্ট আলাস্কায় বৈঠকের সময় ট্রাম্প নিজ হাতে মেলানিয়ার সেই চিঠি পৌঁছে দেন পুতিনের কাছে। উপস্থিত কর্মকর্তারা বলছেন, মার্কিন ও রুশ প্রতিনিধিদলের সামনেই পুতিন তৎক্ষণাৎ চিঠিটি পড়ে ফেলেন।
২ দিন আগে