leadT1ad

রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে সাবেক এমপির সুপারিশ ফাঁস হলো ফেসবুকে

স্ট্রিম সংবাদদাতারাজশাহী
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ৪০
রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে সাবেক এমপির সুপারিশ ফাঁস হলো ফেসবুকে। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নিয়োগে সাবেক এক সংসদ সদস্যের সুপারিশ ঘিরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির লতিফুর রহমান এক চাকরিপ্রার্থীর পক্ষে সুপারিশ করেছেন ।

ওই প্রার্থীর নাম আজমীরা আরেফিন। তিনি রাবির ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক পদের জন্য আবেদন করেছিলেন এবং সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক পেয়েছেন। সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের দপ্তরে।

শনিবার দিবাগত রাতে রাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের স্টোরিতে আজমীরার প্রবেশপত্রের একটি ছবি প্রকাশ পায়। প্রবেশপত্রের ওপরের অংশে ইংরেজিতে রেফারেন্স হিসেবে লেখা আছে লতিফুর রহমানের নাম। এর সঙ্গে লেখা আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য।

ছবিটি ফাঁস হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে ওই রাতেই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান দুঃখপ্রকাশ করে লেখেন, ‘আমার ফেসবুক স্টোরিতে একজন আবেদনকারীর প্রবেশপত্র কীভাবে আপলোড হয়েছে, বুঝতে পারছি না। মোবাইল ফোনটি নিয়ে আমার ছেলে কিছু সময় গেম খেলছিল। হয়তো সে সময়ই ভুলবশত ছবিটি স্টোরিতে আপলোড হয়ে গেছে।’

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আরও লেখেন, ‘প্রতিদিন বিভিন্ন আবেদনকারী বা তাদের পক্ষ থেকে কেউ এসে সিভি ও প্রবেশপত্র দিয়ে যান, কেউ ফোনে, আবার কেউ হোয়াটসঅ্যাপে বা টেক্সট মেসেজে সুপারিশ পাঠান। রুয়ার নির্বাচনের সময় সাবেক এক এমপির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। কয়েক দিন আগে তিনি ফোন করে তাঁর এলাকার একজন আবেদনকারীর জন্য প্রবেশপত্র পাঠান।’

‘এই মুহূর্তে আমার কাছে ডজনখানেক এরকম সুপারিশ আছে। তবে এগুলোর কোনোটি লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষায় প্রভাব ফেলবে না। স্টোরির ঘটনায় দুঃখিত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি’—যোগ করেন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন।

রাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) সাম্প্রতিক নির্বাচনে বিএনপিপন্থীরা অংশ না নেওয়ায় সভাপতি, সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষসহ ২৭টি পদে জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বর্তমানে রাকসু নির্বাচন নিয়েও ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে শিক্ষক নিয়োগে জামায়াত নেতার সুপারিশ ফাঁস হওয়াকে অনেকেই রাজনৈতিক দৃষ্টিতে দেখছেন।

অধ্যাপক ফরিদের স্ট্যাটাসে একজন মন্তব্যকারী লিখেছেন, ‘এটা কোনো ভুল নয়, পরিকল্পিত এজেন্ডার অংশ। ডজনখানেক রেফারেন্সের মধ্যে ঠিক এই একটিই ভুলে শেয়ার হলো কেন? এখান থেকেই ছাত্রদল ইস্যু বানাবে, মিছিল-মিটিং হবে।’

আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘বাচ্চাদের হাতে ফোন দিলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতেই পারে। সতর্ক থাকা উচিত ছিল।’ অনেকেই শিক্ষক নিয়োগে এ ধরনের সুপারিশের সমালোচনা করেছেন।

রোববার সকালে সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি জানান, অন্য একটি লাইনে কথা বলছেন। পরে ফের ফোন করার অনুরোধ জানালেও আর ফোন ধরেননি। ফলে এ বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Ad 300x250

সম্পর্কিত