স্ট্রিম ডেস্ক
ইউরোপজুড়ে বাজছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা। বৃষ্টির ধারার মতো গুলি ঝরছে ফিলিস্তিনে। শরণার্থীদের শোকে ভারী হয়ে আছে কাশ্মীরের আকাশ। পৃথিবীজুড়ে যেন চলছে যুদ্ধের মৌসুম। আর এই যুদ্ধকেই ‘পাশবিক পাগলামি’ বলেছিলেন এই পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্য উদ্ভাবক লিওনার্দ দ্য ভিঞ্চি। মহান এই উদ্ভাবকের জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক কেমন ছিল তাঁর কাছে যুদ্ধ আর শিল্পের মিথস্ক্রিয়া। বিস্তারিত জানাচ্ছেন শতাব্দীকা ঊর্মি
ইতালির রেনেসাঁ পর্বের সবচেয়ে বিস্ময়কর ও রহস্যময় মানুষদের একজন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। তাঁর জীবন আর কাজ যেন বিস্ময়ের দরজা খুলে দেওয়া এক কল্পনাপ্রবণ মানচিত্র। জীবনের মানচিত্রজুড়েও তাঁর তিনি দেখিয়েছেন বিচিত্র কারুকাজ। মোনালিসার বিখ্যাত হাসি থেকে যুদ্ধযানের নকশা ছিল যেন তাঁর ‘এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর হাতে রণতূর্য!’
ফ্লোরেন্স ছেড়ে মিলানে পাড়ি জমালেন ভিঞ্চি। বিশ্বখ্যাত এই চিত্রকর করলেন যুদ্ধযন্ত্র বানানোর নকশা করলেন।
১৪৮২ সাল। ফ্লোরেন্স তখন রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থায়। লিওনার্দো তরুণ, প্রতিভাবান, কিন্তু স্থায়ী পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় নিজের চিন্তা ও কাজের জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তখন তিনি চলে যান মিলান শহরে, যেখানে ডিউক লুডোভিকো স্পফোর্জা তাঁকে আমন্ত্রণ জানান।
মিলান তখন শুধু সামরিকভাবে নয়, শিল্প-সংস্কৃতিতেও সমৃদ্ধ হতে চাইছিল। লিওনার্দো স্রেফ একজন চিত্রশিল্পী হিসেবে নন, নিজেকে উপস্থাপন করেন একজন সামরিক প্রকৌশলী, জলপ্রকৌশল বিশেষজ্ঞ, এমনকি বাদ্যযন্ত্র নির্মাতা হিসেবেও। নিজের প্রতিভার পরিধি বাড়াতে এবং জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই ছিল এই পা বাড়ানো।
লিওনার্দো যুদ্ধকে বলেছিলেন ‘পাশবিক পাগলামি’, অথচ তিনিই যুদ্ধযন্ত্র বানানোর অসাধারণ নকশা করেছিলেন! এর পেছনে ছিল বাস্তবতা—তাঁর পৃষ্ঠপোষক চাইতেন এমন কিছু, আর রেনেসাঁ যুগের শিল্পীরা পৃষ্ঠপোষকের ইচ্ছা পূরণেই কাজ করতেন।
ভিঞ্চির কিছু চমকপ্রদ যুদ্ধযন্ত্রের নকশা ছিল। যেমন মাল্টি ব্যারেল কামান, যা একসঙ্গে কামানের অনেকগুলো গুলি ছুঁড়বে, এক কথায় মেশিনগানের আদিরূপ। সাঁজোয়া রথ (ট্যাংক) যা গোলাকৃতি, কামানে ঘেরা এক যান, যেটা সৈন্যরা চালাত। যুদ্ধের ভ্রাম্যমাণ দুর্গ যেন!
‘আংগেয়ারির যুদ্ধ’: অদৃশ্য তবু অমর
১৫০৩ সালে লিওনার্দো আবার ফ্লোরেন্সে ফিরে আসেন। আঁকেন ব্যাটল অব আংগেয়ারি। আংগেয়ারির যুদ্ধে একটি পতাকা দখলের জন্য লড়াইয়ে লিপ্ত চারজন পুরুষকে উত্তেজিত যুদ্ধ ঘোড়ায় চড়ে চিত্রিত করা হয়েছে।
সেই সময় আরেক দেয়ালে একই রকম এক যুদ্ধচিত্র আঁকার দায়িত্ব পান মিকেলেঞ্জেলো। ১৫০৪ সালে আঁকেন ব্যাটল অব ক্যাসিনো।
লিওনার্দোর তুলিতে যুদ্ধ কেবল রক্ত আর মৃত্যু ছিল না, ছিল আবেগ, ভয়, সাহস আর হিংসার সংমিশ্রণ। তিনি প্রতিটি মুখ, প্রতিটি দেহের গতি এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন যে মনে হয় ছবিগুলো প্রাণ পাচ্ছে।
ফ্লোরেন্সের পালাজ্জো ভেক্কিও প্রাসাদে লিওনার্দের পাশাপাসি যুদ্ধচিত্র আঁকার দায়িত্ব পান মিকেলেঞ্জেলো। ১৫০৪ সালে আঁকেন ব্যাটল অব ক্যাসিনো।
নতুন কৌশল, পুরনো দেয়াল
লিওনার্দো এই চিত্র আঁকার সময় এক অভিনব কৌশল ব্যবহার করতে চাইলেন। তেলরঙের সঙ্গে গরম মোম মিশিয়ে দেয়ালে লাগানো। কিন্তু দেয়াল ছিল আর্দ্র। রং গলে পড়তে লাগল, ছবি নষ্ট হয়ে যেতে থাকল।
ছবিটি তিনি শেষ করতে পারলেন না। কাজ থেমে যায় আর কালের প্রবাহে তা হারিয়ে যায়। মিকেলেঞ্জেলোও তাঁর কাজ শেষ করেননি। দুই প্রতিভার দুটি ছবি। দুটিই থেকে যায় অসমাপ্ত।
চিত্রের অন্তর্ধান: গল্প না সত্য?
পরবর্তী সময়ে পালাজ্জো ভেক্কিওর অভ্যন্তরীণ সংস্কারে হয়তো ছবিটি মুছে ফেলা হয়। অথবা কোনো দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে রাখা হয়। ২০০০ সালের দিকে গবেষক মাউরিজিও সেরাচিনি দাবি করেন, চিত্রটির রঙের কণা নতুন দেয়ালের পেছনে পাওয়া গেছে। কিন্তু রাজনৈতিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিতর্কে খনন বন্ধ হয়ে যায়। এখনো ছবিটি অদৃশ্যই রয়ে গেছে, শুধু কিছু স্কেচ আর বর্ণনার মধ্যেই তার অস্তিত্ব টিকে আছে।
লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এমন একজন মানুষ, যিনি সব কাজ শেষ করতে পারেননি। তবুও প্রতিটি অসমাপ্ত কাজই ভবিষ্যতের আলো জ্বালিয়ে গেছে। যুদ্ধকে ঘৃণা করেও তিনি যুদ্ধের যন্ত্র বানালেন। শিল্পকে ভালোবেসেও তৈরি করলেন এমন এক চিত্র, যা হারিয়েছিল সময়ের আবডালে।
‘আংগেয়ারির যুদ্ধ’ শুধুই একটা ছবি নয়। এটি এক প্রশ্ন। শিল্প, যুদ্ধ আর নৈতিকতার সীমা কতদূর? আর লিওনার্দো ছিলেন সেই সীমার প্রহরী।
ইউরোপজুড়ে বাজছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামা। বৃষ্টির ধারার মতো গুলি ঝরছে ফিলিস্তিনে। শরণার্থীদের শোকে ভারী হয়ে আছে কাশ্মীরের আকাশ। পৃথিবীজুড়ে যেন চলছে যুদ্ধের মৌসুম। আর এই যুদ্ধকেই ‘পাশবিক পাগলামি’ বলেছিলেন এই পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্য উদ্ভাবক লিওনার্দ দ্য ভিঞ্চি। মহান এই উদ্ভাবকের জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক কেমন ছিল তাঁর কাছে যুদ্ধ আর শিল্পের মিথস্ক্রিয়া। বিস্তারিত জানাচ্ছেন শতাব্দীকা ঊর্মি
ইতালির রেনেসাঁ পর্বের সবচেয়ে বিস্ময়কর ও রহস্যময় মানুষদের একজন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। তাঁর জীবন আর কাজ যেন বিস্ময়ের দরজা খুলে দেওয়া এক কল্পনাপ্রবণ মানচিত্র। জীবনের মানচিত্রজুড়েও তাঁর তিনি দেখিয়েছেন বিচিত্র কারুকাজ। মোনালিসার বিখ্যাত হাসি থেকে যুদ্ধযানের নকশা ছিল যেন তাঁর ‘এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর হাতে রণতূর্য!’
ফ্লোরেন্স ছেড়ে মিলানে পাড়ি জমালেন ভিঞ্চি। বিশ্বখ্যাত এই চিত্রকর করলেন যুদ্ধযন্ত্র বানানোর নকশা করলেন।
১৪৮২ সাল। ফ্লোরেন্স তখন রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থায়। লিওনার্দো তরুণ, প্রতিভাবান, কিন্তু স্থায়ী পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় নিজের চিন্তা ও কাজের জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তখন তিনি চলে যান মিলান শহরে, যেখানে ডিউক লুডোভিকো স্পফোর্জা তাঁকে আমন্ত্রণ জানান।
মিলান তখন শুধু সামরিকভাবে নয়, শিল্প-সংস্কৃতিতেও সমৃদ্ধ হতে চাইছিল। লিওনার্দো স্রেফ একজন চিত্রশিল্পী হিসেবে নন, নিজেকে উপস্থাপন করেন একজন সামরিক প্রকৌশলী, জলপ্রকৌশল বিশেষজ্ঞ, এমনকি বাদ্যযন্ত্র নির্মাতা হিসেবেও। নিজের প্রতিভার পরিধি বাড়াতে এবং জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই ছিল এই পা বাড়ানো।
লিওনার্দো যুদ্ধকে বলেছিলেন ‘পাশবিক পাগলামি’, অথচ তিনিই যুদ্ধযন্ত্র বানানোর অসাধারণ নকশা করেছিলেন! এর পেছনে ছিল বাস্তবতা—তাঁর পৃষ্ঠপোষক চাইতেন এমন কিছু, আর রেনেসাঁ যুগের শিল্পীরা পৃষ্ঠপোষকের ইচ্ছা পূরণেই কাজ করতেন।
ভিঞ্চির কিছু চমকপ্রদ যুদ্ধযন্ত্রের নকশা ছিল। যেমন মাল্টি ব্যারেল কামান, যা একসঙ্গে কামানের অনেকগুলো গুলি ছুঁড়বে, এক কথায় মেশিনগানের আদিরূপ। সাঁজোয়া রথ (ট্যাংক) যা গোলাকৃতি, কামানে ঘেরা এক যান, যেটা সৈন্যরা চালাত। যুদ্ধের ভ্রাম্যমাণ দুর্গ যেন!
‘আংগেয়ারির যুদ্ধ’: অদৃশ্য তবু অমর
১৫০৩ সালে লিওনার্দো আবার ফ্লোরেন্সে ফিরে আসেন। আঁকেন ব্যাটল অব আংগেয়ারি। আংগেয়ারির যুদ্ধে একটি পতাকা দখলের জন্য লড়াইয়ে লিপ্ত চারজন পুরুষকে উত্তেজিত যুদ্ধ ঘোড়ায় চড়ে চিত্রিত করা হয়েছে।
সেই সময় আরেক দেয়ালে একই রকম এক যুদ্ধচিত্র আঁকার দায়িত্ব পান মিকেলেঞ্জেলো। ১৫০৪ সালে আঁকেন ব্যাটল অব ক্যাসিনো।
লিওনার্দোর তুলিতে যুদ্ধ কেবল রক্ত আর মৃত্যু ছিল না, ছিল আবেগ, ভয়, সাহস আর হিংসার সংমিশ্রণ। তিনি প্রতিটি মুখ, প্রতিটি দেহের গতি এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন যে মনে হয় ছবিগুলো প্রাণ পাচ্ছে।
ফ্লোরেন্সের পালাজ্জো ভেক্কিও প্রাসাদে লিওনার্দের পাশাপাসি যুদ্ধচিত্র আঁকার দায়িত্ব পান মিকেলেঞ্জেলো। ১৫০৪ সালে আঁকেন ব্যাটল অব ক্যাসিনো।
নতুন কৌশল, পুরনো দেয়াল
লিওনার্দো এই চিত্র আঁকার সময় এক অভিনব কৌশল ব্যবহার করতে চাইলেন। তেলরঙের সঙ্গে গরম মোম মিশিয়ে দেয়ালে লাগানো। কিন্তু দেয়াল ছিল আর্দ্র। রং গলে পড়তে লাগল, ছবি নষ্ট হয়ে যেতে থাকল।
ছবিটি তিনি শেষ করতে পারলেন না। কাজ থেমে যায় আর কালের প্রবাহে তা হারিয়ে যায়। মিকেলেঞ্জেলোও তাঁর কাজ শেষ করেননি। দুই প্রতিভার দুটি ছবি। দুটিই থেকে যায় অসমাপ্ত।
চিত্রের অন্তর্ধান: গল্প না সত্য?
পরবর্তী সময়ে পালাজ্জো ভেক্কিওর অভ্যন্তরীণ সংস্কারে হয়তো ছবিটি মুছে ফেলা হয়। অথবা কোনো দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে রাখা হয়। ২০০০ সালের দিকে গবেষক মাউরিজিও সেরাচিনি দাবি করেন, চিত্রটির রঙের কণা নতুন দেয়ালের পেছনে পাওয়া গেছে। কিন্তু রাজনৈতিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিতর্কে খনন বন্ধ হয়ে যায়। এখনো ছবিটি অদৃশ্যই রয়ে গেছে, শুধু কিছু স্কেচ আর বর্ণনার মধ্যেই তার অস্তিত্ব টিকে আছে।
লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এমন একজন মানুষ, যিনি সব কাজ শেষ করতে পারেননি। তবুও প্রতিটি অসমাপ্ত কাজই ভবিষ্যতের আলো জ্বালিয়ে গেছে। যুদ্ধকে ঘৃণা করেও তিনি যুদ্ধের যন্ত্র বানালেন। শিল্পকে ভালোবেসেও তৈরি করলেন এমন এক চিত্র, যা হারিয়েছিল সময়ের আবডালে।
‘আংগেয়ারির যুদ্ধ’ শুধুই একটা ছবি নয়। এটি এক প্রশ্ন। শিল্প, যুদ্ধ আর নৈতিকতার সীমা কতদূর? আর লিওনার্দো ছিলেন সেই সীমার প্রহরী।
মুর্তজা বশীর বাংলাদেশের শিল্প আন্দোলনের দ্বিতীয় প্রজন্মের চিত্রশিল্পী। তাঁর জন্ম ১৯৩২ সালে ১৭ আগষ্ট ঢাকার শহরে। বাবা জ্ঞানতাপস ড. মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, মা মরগুবা খাতুন।
১২ ঘণ্টা আগেতাহসান আর মিথিলার ছাড়াছাড়ির গসিপে পার্টিসিপেট করে নাই এমন মানুষ খুব কমই ছিল। ব্যাটারা ব্যাপক দুঃখী আর ভিক্টিমাইজড মোডে চলে গেলেও নারীরা মৃদু খুশিই হইছে। এত হ্যান্ডসাম একটা ছেলে সিঙ্গেল দেখাই তো আরাম, নাকি? আমার এক বান্ধবীর মোবাইলের ওয়ালপেপারেও সেইভ করা ছিল তাহসানের ছবি।
১৩ ঘণ্টা আগেভোর থেকেই ঢাকার আকাশে উলুধ্বনি আর শাঁখের আওয়াজে শুরু হয় শুভ জন্মাষ্টমীর উৎসব। রঙিন শোভাযাত্রা, ভক্তদের ঢল ও ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পুজা-অর্চনায় মুখর ছিল পুরান ঢাকা। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ঘিরে ভক্তি, আনন্দ আর সম্প্রীতির আবহে মিলেমিশে ছিল আবেগ, স্মৃতি ও সামাজিক একতার আহ্বান।
২ দিন আগেশিল্পী হিসেবে নিজের সৃষ্টির মধ্যে ততদিন একজন আইয়ুব বাচ্চু বেঁচে থাকবেন, যতদিন বাংলা গান বেঁচে থাকবে। পাশাপাশি আমার প্রজন্মের সবার মধ্যে তিনি বেঁচে থাকবেন একজন বড় ভাই হিসেবে, মেন্টর হিসেবে, অভিভাবক হিসেবে। কারণ, একজন আইয়ুব বাচ্চু বাংলা রকযাত্রায় আমাদের ছায়াবৃক্ষ।
২ দিন আগে