leadT1ad

হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হবে বড় পরীক্ষা: কুগেলম্যান

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১৫: ৩৯
দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান। সংগৃহীত ছবি

দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, ‘মঙ্গলবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন থেকে বঞ্চিত। তাই হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের জন্য আগামী বছরের নির্বাচন হবে বড় পরীক্ষা।’

বুধবার (৬ আগস্ট) মার্কিন সাময়িকী ফরেন পলিসি’র সাউথ এশিয়া ব্রিফে এক লেখায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

কুগেলম্যান বলেন, ‘হাসিনার পতনের পর এক বছর হলো। আন্দোলনে মুখে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার এক বছর উদযাপন করছে বাংলাদেশ। ছাত্রদের নেতৃত্বে হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে টানা কয়েক সপ্তাহ আন্দোলনের পর তাঁর পতন হয়।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলন চলাকালে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী ছাত্রদের ওপর কঠোর দমন পীড়ন চালায়। এতে ১৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়। টানা ১৫ বছর হাসিনার আওয়ামী লীগ দেশটিতে শাসন করে। তাই হাসিনার পতনে ব্যাপক রাজনৈতিক প্রভাব পড়ে দেশটিতে।’

হাসিনার সময়ের চেয়ে আজ বাংলাদেশের মানুষ বেশি সুখী ও স্বাধীন। তবে বিপ্লব-পরবর্তী মধুচন্দ্রিমা এখন অনেকটাই অতীত উল্লেখ করে কুগেলম্যান বলেন, ‘নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদারে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘এদিকে, ফরেন পলিসিতে সালিল ত্রিপাঠি লিখেছেন, দেশে (বাংলাদেশে) প্রতিশোধপরায়ণ রাজনৈতিক চক্র এখনো অব্যাহত রয়েছে।’

কুগেলম্যান বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া অনেকে অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর চলতি বছরের শুরুতে পদত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। তারা হাসিনার পতনের পর পর দেওয়া উচ্চাভিলাষী কাঠামোগত সংস্কারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে জোর দিয়েছে। তবে অগ্রগতি থমকে আছে। আর এতে অনেক বাংলাদেশি হতাশ।’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ইউনুস বলেন, ‘নির্বাচন সামনে। আপনি যদি নিজের নির্বাচনী এলাকার বাইরে থাকেন, এখন থেকেই নিয়মিত যাতায়াত শুরু করুন। যোগ্যতম প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নিজেকে প্রস্তুত করুন।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভোট দেওয়ার সময় যেন তাদের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে, যাদের তাজা রক্ত আমাদের এই পবিত্র অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। ফেব্রুয়ারি বেশি দূরে নয়। প্রস্তুতির দিনগুলো দ্রুত পেরিয়ে যাবে, আর খুব শিগগিরই আসবে ভোটের দিন।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত থাকার পর এবার সবাই ভোট দেবেন, কেউ পেছনে পড়ে থাকবেন না। চলুন সবাই গর্ব করে বলি: নতুন বাংলাদেশ গড়ার যাত্রায় আমি ভোট দিয়েছি। আর এই ভোটেই দেশ সেই পথে এগিয়ে গেছে।’

ড. ইউনূসের এই ঘোষণার পরদিন (৬ আগস্ট) বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে অনুরোধ জানানো হয়। এই চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের জন্য কমিশনের প্রতি সরকারের অনুরোধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমদের কাছে পাঠানো চিঠিতে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিঞা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রত্যাশিত মানসম্পন্ন একটি ‘অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর’ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান।

Ad 300x250

সম্পর্কিত