leadT1ad

বস্তায় ভরা ভাইয়ের মরদেহ গুম করতে গিয়ে ধরা পড়লেন স্বামী-স্ত্রী

স্ট্রিম ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৫, ০২: ৪৫

চট্টগ্রাম নগরের একটি ভবন থেকে একটি বস্তা বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁরা বস্তাটি আটকে রেখে স্থানীয় চান্দগাঁও থানায় খবর দেন। পরে বস্তা থেকে উদ্ধার হয় এক ব্যক্তির রক্তাক্ত মরদেহ।

চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে চান্দগাঁও থানার বি-ব্লকের ২ নম্বর রোডের ৩ নম্বর ভবনের একটি ফ্ল্যাটে। হত্যার শিকার ব্যক্তির নাম মো. শাহেদ (৩৫)।

ঘটনাস্থল থেকে আটক হন শাহেদের ছোটভাই মো. জায়েদ ও তাঁর স্ত্রী ওহি। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) ভোরের দিকে লাশ গুম করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন জায়েদ-ওহি দম্পতি। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এর আগে বুধবার রাতের কোনো এক সময় মো. শাহেদকে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, পারিবারিকভাবে পাওয়া একটি ফ্ল্যাটে মো. শাহেদ তার ছোটভাই মো. জায়েদের পরিবারের সঙ্গে বাস করতেন। ফ্ল্যাটের মালিকানাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিলে। এ নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে ছোটভাই ও তাঁর স্ত্রী মিলে বড়ভাই শাহেদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ বলেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে বুধবার রাতের কোনো এক সময় শাহেদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তার বুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত ব্যক্তির শরীরে প্রায় ৭টি গভীর আঘাত পাওয়া গেছে।

হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টা

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যার পর শাহেদের মরদেহ একটি বস্তায় ভরে বাসার বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মো. জায়েদ ও তার স্ত্রী ওহিকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।

থানার ওসি আফতাব বলেন, ‘তাঁরা লাশ গুমের চেষ্টা করছিল। একপর্যায়ে আমরা গিয়ে তাদের আটক করি। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যার কথা স্বীকার করেন।’

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পারিবারিক সম্পত্তি ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে ভাইদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছিল। বাড়ির মালিকানা, খরচের ভাগ, এমনকি ফ্ল্যাটে কার কর্তৃত্ব থাকবে তা নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকত।

স্থানীয় একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘শাহেদ ভাই খুব ভালো মানুষ ছিলেন। মাঝেমধ্যে তাঁদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হতো, কিন্তু এমন ভয়ংকর কিছু ঘটবে, কেউ ভাবেনি।’

তদন্তে নেমেছে সিআইডি

পুলিশ শাহেদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার সময় ব্যবহৃত ছুরি ও রক্তমাখা পোশাক জব্দ করা হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রতিবেশীদের জবানবন্দিও নেওয়া হচ্ছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত